মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন শুল্কনীতির কারণে ধস নেমেছে জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার স্টিল রফতানিতে।
সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত বছরের তুলনায় চলতি বছরের মার্চ মাসে যুক্তরাষ্ট্রে জাপানের স্টিল রফতানি কমেছে ১৬ দশমিক ৬ শতাংশ ও দক্ষিণ কোরিয়ার রফতানি কমেছে ২৪ শতাংশ।
মার্চের ১২ তারিখে ট্রাম্প প্রশাসনের ঘোষিত স্টিল আমদানিতে ২৫ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হওয়ার পর থেকেই এই পতন লক্ষ্য করা যায়। এই একতরফা পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘদিনের বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর লক্ষ্যে নেওয়া হলেও এতে ঘনিষ্ঠ বাণিজ্য অংশীদারদের সঙ্গে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে এবং বৈশ্বিক সরবরাহ শৃঙ্খল বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
জাপানের অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী, মার্চ মাসে দেশটির মোট লৌহ ও স্টিলজাত পণ্যের রফতানি কমেছে ৮ দশমিক ২%। অন্যদিকে, দক্ষিণ কোরিয়ার ক্ষেত্রে এই পতন ১৪ দশমিক ১ শতাংশ।
তবে একই সময়ে জাপানের মোট রফতানি ৩ দশমিক ৯ শতাংশ বেড়েছে, যা টানা ছয় মাসের বৃদ্ধির ধারা বজায় রেখেছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, মার্কিন শুল্ক কার্যকর হওয়ার আগে পণ্য আগেভাগে পাঠানো (tariff front-loading) এর জন্য এই বৃদ্ধি ঘটেছে।
শুল্ক কার্যকর হওয়ার আগে রফতানি কিছুটা সুবিধা পেয়েছে, বলেন মুডিজ অ্যানালিটিকসের সহযোগী অর্থনীতিবিদ জিমিন ব্যাং। তবে বৈশ্বিক বাণিজ্যের নেতিবাচক পরিস্থিতি আগামী মাসগুলোতে রফতানিকে বড় ধাক্কা দিতে পারে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এপ্রিলের শুরুতে জাপানের ওপর ২৪ শতাংশ ‘পারস্পরিক শুল্ক’ ঘোষণা করেন, যা ৯০ দিনের জন্য স্থগিত রাখা হয়েছে। তবে ১০ শতাংশ ‘বেসলাইন শুল্ক’ ৫ এপ্রিল থেকে কার্যকর হয়েছে।
এছাড়া ৩ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্র ২৫ শতাংশ গাড়ি আমদানি শুল্ক আরোপ করে, যার প্রভাব জাপানে আরও বেশি পড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ ২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের মোট গাড়ি আমদানির ১৩ শতাংশ এসেছে জাপান থেকে।
জাপানের মোট আমদানি একই সময়ে বছরের ভিত্তিতে বেড়েছে ২ শতাংশ। এর ফলে দেশটি ৫৪৪ বিলিয়ন ইয়েন (৩ দশমিক ৮ বিলিয়ন বা ৩৮০ কোটি মার্কিন ডলার) বাণিজ্য উদ্বৃত্ত অর্জন করেছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, যদি শুল্ক বিরোধ মীমাংসা না হয়, তাহলে দীর্ঘ মেয়াদে জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার জন্য এই ধারা আরও সংকটময় হয়ে উঠতে পারে। সূত্র: নিক্কেই এশিয়া
বিডি প্রতিদিন/একেএ