রাশিয়ার দ্বারা জোরপূর্বক স্থানান্তরিত ইউক্রেনীয় শিশুদের ফেরত দেওয়া নিয়ে কোনো আপস হবে না বলে জানিয়েছে প্রেসিডেন্ট ভলদিমির জেলেনস্কির প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর। এ বিষয়ে জেলেনস্কির প্রধান উপদেষ্টা আন্দ্রি ইয়েরমাকের ঘনিষ্ঠ সহযোগী দারিয়া জারিভনা বলেছেন, ‘শান্তি আলোচনায় আমাদের অংশগ্রহণ মানে এই নয় যে, মূল বিষয়গুলোতে আমরা আপস করে ফেলেছি।’
গত মঙ্গলবার সৌদি আরবে অনুষ্ঠিত এক ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে ওই মন্তব্য করেন জারিভনা। বৈঠকে ইউক্রেন, যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার প্রতিনিধি দল অংশ নিয়েছিল।
জারিভনা বলেন, ‘আমাদের অবস্থান স্পষ্ট। রাশিয়া যেসব ইউক্রেনীয় শিশুকে জোর করে অপহরণ ও স্থানান্তর করেছে, তাদের অবশ্যই ফেরত দিতে হবে। এটি শান্তি আলোচনার কেন্দ্রীয় ও অবিচ্ছেদ্য অংশ। পাশাপাশি সব বন্দী ও জোর করে বিতাড়িত প্রাপ্তবয়স্কদেরও ফেরত দিতে হবে।’
ওই আলোচনার দ্বিতীয় পর্বে মূলত কৃষ্ণ সাগরে যুদ্ধবিরতির প্রযুক্তিগত বাস্তবায়ন এবং ইউক্রেনের জ্বালানি স্থাপনায় হামলা বন্ধের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের যৌথ বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ওয়াশিংটন যুদ্ধবন্দিদের বিনিময়, বেসামরিক বন্দীদের মুক্তি এবং জোর করে স্থানান্তরিত ইউক্রেনীয় শিশুদের ফিরিয়ে আনার বিষয়ে অঙ্গীকারবদ্ধ।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্র ওই শিশুদের ফেরত আনার জন্য কী ব্যবস্থা নেবে, সে বিষয়ে নির্দিষ্ট কিছু উল্লেখ করেনি। তবে জারিভনা বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র আমাদের দাবিকে সমর্থন করছে, তাই এটি সব যৌথ বিবৃতিতে অন্তর্ভুক্ত থাকবে।’
মস্কোর দাবি অনুযায়ী, ২০২২ সালে ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রায় হামলা চালানোর পর থেকে তারা ৭ লাখ ইউক্রেনীয় শিশুকে ‘উদ্ধার’ করেছে এবং রাশিয়ায় নিয়ে গেছে। বর্তমানে প্রায় ১৬ লাখ শিশু রাশিয়ার দখল করে নেওয়া ইউক্রেনীয় অঞ্চলগুলোতে বসবাস করছে। সেখানে তাদের রুশ ইতিহাস সম্পর্কে জানতে বাধ্য করা হচ্ছে।
রুশ পাঠ্যক্রম অনুসরণ করতে অস্বীকৃতি জানানো শিক্ষকদের কারাবন্দী ও নির্যাতন করা হয়েছে বলে অভিযোগ আছে। এখন পর্যন্ত ইউক্রেন ১ হাজার ২৪৭ শিশুকে উদ্ধার করতে পেরেছে। এটি সম্ভব হয়েছে মূলত তাদের মায়েদের ঝুঁকিপূর্ণ রাশিয়া যাত্রার মাধ্যমে।
দ্য টাইমস-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসব শিশুর অনেকে রুশ জাতীয় সঙ্গীত গাইতে অস্বীকৃতি জানানোয় মারধর ও নির্যাতনের শিকার হয়েছে।
অভিযোগ আছে, রাশিয়ার দখল করে নেওয়া ইউক্রেনের দোনেস্ক ও লুহানস্ক অঞ্চলের বহু কিশোর-কিশোরীকে রুশ সামরিক বাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে এবং যুদ্ধে এই কিশোরদের উল্লেখযোগ্যসংখ্যক নিহত হয়েছে।
সূত্র:দ্য টাইমস
বিডি প্রতিদিন/আশিক