বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের ভাষণ ‘যথেষ্ট শক্তিশালী’ ছিল। ওই ভাষণে সরকারের সংস্কার কর্মসূচি ও জাতীয় ঐক্য- দুটোই প্রতিফলিত হয়েছে। তাঁর দল নিশ্চিত যে, আগামী ফেব্রুয়ারিতেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে যোগদান শেষে হোটেলে ফিরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বিএনপি মহাসচিব এ মন্তব্য করেন। তিনি প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গী হয়ে বর্তমানে নিউইয়র্কে রয়েছেন। স্থানীয় সময় শুক্রবার সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ভাষণ দেন অধ্যাপক ইউনূস। ভাষণ চলাকালে মির্জা ফখরুল অধিবেশনকক্ষে উপস্থিত ছিলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, সাম্প্রতিক দিনগুলোতে তিনি (প্রধান উপদেষ্টা) এসব বিষয় বারবার উল্লেখ করছেন। এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর কোনো সন্দেহ নেই। আমরা নিশ্চিত যে, নির্বাচন ফেব্রুয়ারি ২০২৬-এই হবে। বিএনপির মহাসচিব প্রধান উপদেষ্টার ভাষণকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, প্রধান উপদেষ্টা তাঁর ভাষণে নিঃসন্দেহে সেই উদ্দেশ্যের কথাই বলেছেন, যার ভিত্তিতে তাঁদের সরকার গঠিত হয়েছিল। তাঁরা এমন সময়ে দায়িত্ব নিয়েছিলেন, যখন গণ অভ্যুত্থানের পর দেশে শূন্যতা তৈরি হয়েছিল। রাজনৈতিক দল ও শিক্ষার্থীরা একসঙ্গে তাঁদের সেই দায়িত্ব দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, দেশের অর্থনীতি ও রাজনীতি যে ভয়াবহ অবস্থায় ছিল, এক বছরের মধ্যেই সরকার আপেক্ষিকভাবে ভালো অবস্থায় আনতে চেষ্টা করেছে। এসব বিষয়ও তাঁর ভাষণে প্রতিফলিত হয়েছে। অধ্যাপক ইউনূস ব্যাখ্যা করেছেন, কীভাবে তাঁর সরকার কাজ শুরু করেছে এবং অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করার পাশাপাশি দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সংস্কারের দাবিও মোকাবিলা করেছে।
প্রধান উপদেষ্টার অন্তর্ভুক্তিমূলক দৃষ্টিভঙ্গির প্রশংসা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা খুব খুশি যে ইতিহাসে প্রথমবার তিনি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে সরকারের কাজে অন্তর্ভুক্ত করেছেন। তাঁদের জাতিসংঘে সঙ্গে নিয়েছেন। তাঁর প্রধান উদ্দেশ্য ছিল জাতির ঐক্য প্রদর্শন। তিনি আরও বলেন, আমি মনে করি, এটি এক অনন্য উদ্যোগ, যা বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। এজন্য আমরা পূর্ণ সহযোগিতা দিয়েছি। আমাদের নেতা তারেক রহমানও এটিকে সমর্থন করেছেন। এ সময় জামায়াতে ইসলামীর আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) ইস্যুতে আন্দোলন প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিএনপির অবস্থান স্পষ্ট করে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা স্পষ্টভাবে জানিয়েছি, বিএনপি নিম্নকক্ষে পিআরের পক্ষে নয়।
এমনকি উচ্চকক্ষেও এর পক্ষে আমরা কথা বলিনি। এ ধরনের বিষয়গুলো পরবর্তী সময়ে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা হবে।