জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেত্রী রুনা খান। এ ভার্সেটাইল অভিনেত্রী প্রতিনিয়ত নিজেকে ভাঙছেন। এদিকে প্রথমবারের মতো ডিআইএফএফের প্যানারোমা বিভাগে প্রিমিয়ার হতে যাচ্ছে তাঁর সিনেমা ‘নীলপদ্ম’। এ তারকার সঙ্গে কথোপকথনে- পান্থ আফজাল
ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রথমবারের মতো প্রদর্শিত হচ্ছে আপনার ‘নীলপদ্ম’...
এর আগেও এ উৎসবের প্যানারোমা বিভাগে আমার দুটি সিনেমা, তৌকীর আহমেদের ‘হালদা’ ও সাজেদুল আওয়ালের ‘ছিটকিনি’ জায়গা করে নিয়েছিল। যার মধ্যে ‘হালদা’ ছবিটি সেরা চলচ্চিত্রের পুরস্কারও জয় করে নেয়। তবে এবারের বিষয়টা একটু অন্যরকম ভালো লাগার। কারণটা হলো, ১৫ তারিখে ‘নীলপদ্ম’ প্রথমবার প্রদর্শিত হচ্ছে। ফলে এ উৎসবের মাধ্যমে আমার সঙ্গে দর্শকও প্রথমবার ছবিটি দেখতে পাবেন। এটা আনন্দের।
নীলপদ্মে কীভাবে যুক্ত হলেন?
সম্পূর্ণ কৃতিত্ব অভিনেতা সজল ভাই! আসলে সজল ভাই আর পরিচালক তৌফিক এলাহী জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের। সেই সূত্রে তাদের মধ্যে সখ্য। নীলপদ্ম বিষয়ে কথা হলে সজল ভাই পরিচালককে আমার কথা বলেন। এরপর সজল ভাই ফোন করেন; আমি ধরতে পারিনি। তখন তিনি একটা টেক্সট পাঠান। লেখেন- ‘নীলপদ্মের গল্পটা শুনেছি। তোর জন্য চরিত্রটা ঠিকঠাক হবে। পছন্দ হলে করিস।’ এরপর তৌফিক ভাই যোগাযোগ করেন। গল্প, চরিত্রটি শুনি। অবশেষে কাজটি করা হলো। তবে ধন্যবাদ দিতে চাই তৌফিক ভাইকে, তিনি অনেক কষ্ট করেছেন এ প্রজেক্টের জন্য। তিনি যৌনকর্মীদের নিয়ে অনেক গবেষণা করেছেন, পড়াশোনা করেছেন। এরপর সবকিছু শেয়ার করেছেন। আসলে আমি ডিরেক্টর’স আর্টিস্ট। যখন যেই পরিচালকের সঙ্গে কাজ করেছি, সেই পরিচালকের প্রত্যাশা পূরণ করতে আপ্রাণ চেষ্টা করে গেছি। সেটা হালদার ক্ষেত্রে তৌকীর ভাই, ‘ছিটকিনি’র সাজেদুল আওয়াল বা কষ্টনীড়ের ক্ষেত্রে আশফাক নিপুণ কিংবা অসময়ের কাজল আরেফিন অমি।
সহশিল্পী কতখানি সহযোগিতাপরায়ণ ছিলেন?
সহশিল্পী হিসেবে একজনের কথা না বললেই নয়, তিনি রাশেদ মামুন অপু। আমি ভীষণভাবে কৃতজ্ঞ তাঁর প্রতি। তিনি অনেক সহযোগিতা করেছেন। তিনি কিন্তু এ সিনেমার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র। আরেকজনকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ দিতে চাই। এ সিনেমার সিনেমাটোগ্রাফার নাহিয়ান বেলালকে। তিনি তাঁর দক্ষতা দিয়ে জটিল ও কৌশলগত বিষয়কে অনেক সহজ করে দিয়েছেন।
নতুন আর কী কী কাজ আসবে?
একাধারে তিনটি পূর্ণদৈর্ঘ্য সিনেমার কাজ শেষ করেছি। মাসুদ পথিকের ‘বক’, কৌশিক শংকর দাশের ‘দাফন’ এবং জাহিদ হোসেনের ‘লীলামন্থন’। একটি ওয়েব সিরিজ আইস্ক্রিনের জন্য করেছি, যেটির পরিচালক শাহরিয়ার নাজিম জয়। আর হইচইয়ের জন্য করেছি অমিতাভ রেজা চৌধুরীর ‘বোহেমিয়ান ঘোড়া’, যেখানে আমার সহশিল্পী মোশাররফ করিম। এটিতে চমক হিসেবে রয়েছে সাতজন সুন্দরী নারী। আর আমিতো আছিই! পরিচালক হিসেবে অমিতাভ রেজার প্রতি আমৃত্যু কৃতজ্ঞতা থাকবে। ক্যারিয়ারে প্রথমদিকে তাঁর বিজ্ঞাপনে কাজ করেছি। তবে ‘বোহেমিয়ান ঘোড়া’র মাধ্যমে বহুদিন পর খসরু (সিনেমাটোগ্রাফার) ভাইয়ের সঙ্গে কাজ করলাম। তাঁর সঙ্গে বাচ্চা বয়সে গিয়াস উদ্দিন সেলিমের ‘দর্পহরণ’-এ কাজ করেছিলাম। তাঁর প্রতি ভালো লাগার কোনো শেষ নাই।
নতুন বছরে প্রত্যাশা কী?
আল্লাহ আমার সব স্বপ্ন পূরণ করে দিয়েছেন। আর কোনো চাওয়া-পাওয়া নাই। তবে হ্যাঁ, চাই সুস্থতা। নিজের ও পরিবারের সুস্থতা। আর সারাজীবন অভিনয়টা করে যেতে চাই। আমার জীবনজুড়ে ৯০ ভাগ পরিবার আর ১০ ভাগ অভিনয় জগৎ। আসলে ২০ বছর ধরে অভিনয়ের যেই জায়গায় দাঁড়িয়ে আছি, সেই একই জায়গায় যেন থাকতে পারি। অন্য কিছু চাই না।