উচ্চ সুদের কারণে ব্যবসাবাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিরা। আগামী মুদ্রানীতিতে সুদের হার কমিয়ে এক অঙ্কে নামিয়ে আনার দাবি জানিয়েছেন তারা।
গতকাল রাজধানীর মতিঝিলে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরের সঙ্গে ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর এক বৈঠকে এ দাবি তোলা হয়। বৈঠকে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, বিটিএমএসহ ১৪ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল অংশ নেয়। এতে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর ও সংশ্লিষ্ট বিভাগের নির্বাহী পরিচালকসহ অন্য কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে এফবিসিসিআই মহাসচিব মো. আলমগীর সাংবাদিকদের জানান, বর্তমানে দেশে ব্যাংক ঋণের সুদহার ১৪ শতাংশের ওপরে। অথচ ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা প্রতিযোগিতামূলক বাজারে ১০-১১ শতাংশের বেশি মুনাফা করতে পারেন না। ফলে বর্তমান সুদহার কোনোভাবেই ব্যবসাবান্ধব নয়। তিনি বলেন, উচ্চ সুদের কারণে বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়েছে। বিশ্ব অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের রপ্তানি সক্ষমতা ধরে রাখা, বিনিয়োগ বৃদ্ধির স্বার্থে এবং মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আমরা ধাপে ধাপে সুদহার কমিয়ে এক অঙ্কে নামানোর অনুরোধ জানিয়েছি। এ সময় গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর জানান, নীতি সুদহার আগামী মুদ্রানীতিতেই এক অঙ্কে নামিয়ে আনা হবে। এফবিসিসিআই মহাসচিব আরও বলেন, কভিড-১৯, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, বন্যা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের আর্থিক পুনর্গঠনের লক্ষ্যে পূর্বে গঠিত কমিটির মেয়াদ সেপ্টেম্বরে শেষ হয়েছে। সেই কমিটির মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ৫০ কোটি টাকার নিচের ঋণ পর্যালোচনা ও নীতিগত সহায়তার জন্য নতুন একটি পৃথক কমিটি গঠনের প্রস্তাবও দেওয়া হয়। গভর্নর এ বিষয়ে সম্মতি দিয়েছেন। এ ছাড়া রপ্তানিমুখী শিল্পের ব্যাংকিং সমস্যা দ্রুত সমাধানে বাংলাদেশ ব্যাংকে একটি বিশেষ উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠনের দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এ কমিটিতে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএসহ সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলোর প্রতিনিধি রাখার প্রস্তাব দেওয়া হয়।