রবিবার চেন্নাই সুপার কিংসের বিরুদ্ধে চমক দেখালেন মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের ভিগ্নেশ। নিজের রাজ্য কেরালার হয়ে কোনও ফরম্যাটে একটিও ম্যাচ খেলেননি ২৪ বছরের ভিগ্নেশ। কেরালার ক্রিকেট লিগের একটি দলের হয়ে ভাল খেলেছিলেন। সেখানেই চোখে পড়ে যান মুম্বাইয়ের ‘স্কাউট’দের। তার পর থেকে ঘষেমেজে তৈরি করা হচ্ছিল তাঁকে। রবিবার সেই আস্থার দাম পেল মুম্বাই।
চেন্নাইয়ের ইনিংসের অষ্টম ওভারে বল করতে এসেছিলেন ভিগ্নেশ। সেই ওভারেই তিনি আউট করেন চেন্নাইয়ের অধিনায়ক রুতুরাজ গায়কোয়াড়কে। পরের ওভারে ফিরিয়ে দেন শিবম দুবেকে। দু’জনেই তুলে খেলতে গিয়ে বাউন্ডারির ধারে আউট হন। একই রকম ভাবে লোভ দেখিয়ে দীপক হুডা ফিরিয়ে দেন ভিগ্নেশ। ডিপ স্কোয়্যার লেগে ক্যাচ দেন হুডা।
২০০১-এর ২ মার্চ কেরালার মালাপ্পুরমের পেরিনথালমান্নায় জন্ম ভিগ্নেশের। বাবা সুনীল কুমার অটোচালক। মা কেপি বিন্দু গৃহবধূ। আর্থিক দুরবস্থা থাকা সত্ত্বেও বাবা-মা দু’জনেই ভিগ্নেশকে ক্রিকেট খেলায় উৎসাহ দিয়ে এসেছেন। এখন পিটিএম কলেজে সাহিত্য নিয়ে স্নাতকোত্তর পড়াশোনা করছেন।
কেরালার হয়ে অনূর্ধ্ব-১৪ এবং অনূর্ধ্ব-১৯ পর্যায়ে ক্রিকেট খেলেছেন ভিগ্নেশ। ছোটবেলায় ক্রিকেট খেলার সময় মিডিয়াম পেস এবং টুকটাক স্পিন বোলিং করতেন ভিগ্নেশ। পরে স্থানীয় কোচ মোহাম্মদ শরিফের পরামর্শে স্পিন বোলিং শুরু করেন। তখন ভিগ্নেশ ‘চায়নাম্যান’ বোলিং কাকে বলে, সেটা জানতেনই না। কিন্তু সেই বোলিং নিখুঁত করার জন্য প্রচুর পরিশ্রম করেছেন।
এর পর নিজের ক্রিকেট খেলার উন্নতির জন্য ত্রিশূরে চলে যান। সেন্ট টমাস কলেজের হয়ে কেরল কলেজ প্রিমিয়ার টি-টোয়েন্টি লিগে বেশ কিছু উইকেট নিয়ে নজর কাড়েন। ধারাবাহিক পারফরম্যান্স করায় জলি রোভার্স ক্রিকেট ক্লাব তাঁকে সই করায়। সেখান থেকে তিনি কেরল প্রিমিয়ার লিগে দল আলেপ্পি রিপল্স দলে সুযোগ পান। সেটাই তাঁর জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়।
আলেপ্পির হয়ে খেলার সময় দু’টি ম্যাচে তিনটি উইকেট নেন। সেই সময় তাঁর ‘চায়নাম্যান’ বোলিং নজর কেড়ে নেয়। ওই প্রতিযোগিতায় হাজির ছিলেন মুম্বাইয়ের ‘স্কাউট’রা। তারা ভিগ্নেশকে ট্রায়ালের জন্য ডেকে নেন। সেখানে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের তারকা কিছু ক্রিকেটারকে বল করেন তিনি। নির্বাচকেরাও খুশি হন। এর পর মহা নিলামে তাকে ন্যূনতম মূল্য ৩০ লাখ টাকাতেই কিনে নেয় মুম্বাই।
আইপিএল বা বড় ধরনের ক্রিকেট ম্যাচ খেলা কোনও অভিজ্ঞতা ভিগ্নেশের ছিল না। তাই তাঁকে নিয়ে তাড়াহুড়ো করতে চায়নি মুম্বাই। দক্ষিণ আফ্রিকা টি২০ লিগ চলার সময় এমআই কেপ টাউন দলের নেট বোলার হিসাবে তাকে উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। গোটা সময়েই কেপ টাউন দলের সঙ্গে ছিলেন। গোটা খরচই বহন করেছিল মুম্বাই।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল