আবাসন খাতে আগে থেকেই করের বোঝা অনেক বেশি। আমরা এই বর্ধিত ভ্যাট-ট্যাক্স কমানোর বিষয়ে আগে থেকেই বলে আসছি। কিন্তু কমেনি, বরং বেড়েছে। সরকারের উচিত রেজিস্ট্রেশনের খরচ প্রকৃত ক্রয়মূল্যে নামিয়ে আনা।
তাহলে অঘোষিত টাকাটা চলে আসবে। এখন এক কোটি টাকায় কিনে ২৫ লাখ টাকায় রেজিস্ট্রেশন করছেন। এই ৭৫ লাখ টাকা দেখাচ্ছেনও না, এর ওপর করও দিচ্ছেন না। রেজিস্ট্রেশন খরচ কমিয়ে আনলে আপনি হয়তো ২৫ লাখ টাকায়ই কিনবেন।
তবে এর ওপর ভ্যাট ১৫ শতাংশ না হয়ে ৫ শতাংশ হলে সরকারের রাজস্ব বাড়বে। প্রতিবেশী দেশ ভারত ও পাকিস্তানে ভ্যাটের হার ৫ শতাংশই।
আসন্ন বাজেটে আবাসন খাতে বিনিয়োগের জন্য আমি কালো টাকা সাদা করার সুযোগের পক্ষে নই। কারণ এটা মানুষকে বছরের পর বছর উৎসাহিত করছে।
একজন কালো টাকা সাদা করে ১৫ শতাংশ কর দিলেন আর প্রকৃত করদাতা ২৫ শতাংশ কর দিচ্ছেন। এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
সুদের হারের ঘন ঘন ওঠানামাও অতিরিক্ত বোঝা তৈরি করছে। এ ছাড়া গ্রাহকদের মোট সম্পদমূল্যের কমপক্ষে ৩০ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট করাও চ্যালেঞ্জিং। বিশেষ করে গত দুই বছরে টাকার বিপরীতে ডলারের মূল্যবৃদ্ধিতে কাঁচামালের দাম অনেক বেড়েছে, যার প্রভাব পড়েছে এই খাতে।
মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে অনেকেই নগদ টাকা রাখার চেয়ে আবাসন খাতে বিনিয়োগ করতে উৎসাহী। কারণ টাকার প্রকৃত ক্রয়ক্ষমতা ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে। এক লাখ টাকার বেশি আয়ের ক্রেতারা দেড় থেকে দুই কোটি টাকার মধ্যে দামের বাড়ি ঋণ নিয়ে কিনছেন। দেশের ব্যবসায়ীদের মানুষের চাহিদা মেটানোর সক্ষমতা আছে।
অনেকবার বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নে ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ার পরও আমরা প্রকল্প শেষ করেছি। আমাদের গ্রাহকদের কাছে আমাদের প্রতিশ্রুতির প্রতি সম্মান জানাতে এটা করতে হয়েছে। তবে প্রতিটি কঠিন পরিস্থিতি একটি সুযোগ নিয়ে আসে।
ড্যাপ তৈরি করা হয়েছিল উন্নত দেশের মডেলের ওপর ভিত্তি করে। ইসলামাবাদে ১৯৬০-এর দশকে খালি জমিতে পরিকল্পনা করা হয়েছিল। ডিজাইন এমনভাবে করা হয়েছিল, যা শহরটিকে ঘনত্ব, পরিবেশ এবং উপযোগিতার দিক থেকে সফল করে তুলেছিল।
কিন্তু ঢাকার মতো ৪০০ বছরের পুরনো শহরের জন্য রাতারাতি এ ধরনের পরিবর্তন বাস্তবায়ন করতে পারবেন না। সব মানুষকে স্থানান্তর করতে পারবেন না এবং এর ঘনত্ব কমিয়ে আনতে পারবেন না। ঢাকায় একসঙ্গে এত বাসিন্দাকে স্থানচ্যুত করা সম্ভব নয়। তারা কোথায় যাবে? আপনি সেখানে আবাসন সরবরাহ বাড়াতে পারবেন না।
ব্যাংককে অবকাঠামো এবং সরকারি পরিষেবা বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে অতিরিক্ত মানুষের চাপ মোকাবেলা করা হয়েছে, যাতে জনগণকে রাজধানীতে কেন্দ্রীভূত হতে না হয়। ঢাকার জন্যও একই ধরনের পদ্ধতির প্রয়োজন।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল