বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান জাকারিয়া বলেন, 'খাদ্য উৎপাদনের সঙ্গে জড়িতদের উপযুক্ত জ্ঞান ও প্রশিক্ষণ থাকা জরুরি। আর এই প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য আমরা অনলাইন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করছি। যাদের প্রয়োজন, তারা এখান থেকে প্রশিক্ষণ নিতে পারবেন। তবে, হোটেল কর্মীদের প্রশিক্ষণের জন্য হোটেলে মালিকদের উদ্যোগে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তোলা প্রয়োজন।'
আজ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের প্রধান কার্যালয়ে 'নিরাপদ কৃষি পণ্য উৎপাদন, পরিদর্শন, বাজারজাতকরণ ও ভোক্তা পর্যায়ে প্রাপ্তির সম্ভাবনা, চ্যালেঞ্জ ও করণীয়' শীর্ষক এ সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। সবার জন্য নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাবার নিশ্চিতের পাশাপাশি ন্যায্য মূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যদ্রব্য প্রাপ্তির নিশ্চয়তার লক্ষ্যে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
জাকারিয়া বলেন, ময়মনসিংহে ৬০ লাখ মানুষের বসবাস। সেখানে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তা রয়েছেন মাত্র একজন। এখন এই একজন মানুষের দ্বারাতো এতো মানুষের খাদ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা কঠিন। আর এমন পরিস্থিতি সকল জায়গাতেই। তারপরও আমরা এর মধ্য দিয়েই কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছি।'
তিনি আরো বলেন, স্বাস্থ্য নিরাপত্তার জন্য শিক্ষার প্রয়োজন। আর এই শিক্ষা অর্জনের জন্য সমন্বিত প্রশিক্ষণ দরকার। নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতের লক্ষ্যে আমাদের যাত্রা শুরু হয়েছে, এই যাত্রা অব্যাহত থাকবে।

ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট হুমায়ূন কবির ভুঁইয়ার সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন- বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শোয়েব, মাহমুদুল কবীর মুরাদ, ওয়াহিদুজ্জামান, ড. মোহাম্মদ মোস্তফা, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পরিচালক শওকত ওসমান, বিএসটিআই পরিচালক সাইফুল ইসলাম ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পরিচালক ফকির মুহাম্মদ মুনাওয়ার হোসেন।
অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর আহমেদ একরাম উল্লাহ। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউটের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও বাংলাদেশ অর্গানিক অ্যাগ্রিকালচার নেটওয়ার্ক এর ইনচার্জ ড. নাজিম উদ্দিন।
এসময় তিনি বলেন, নিরাপদ কৃষি পণ্যের উৎপাদন, পরিদর্শন, বাজারজাতকরণ এবং ভোক্তার কাছে পৌঁছানো একটি সমন্বিত প্রচেষ্টার ফল। এ ক্ষেত্রে উৎপাদন পর্যায়ে টেকসই ও পরিবেশবান্ধব কৃষি প্রযুক্তি ব্যবহার, কঠোর পরিদর্শন ব্যবস্থা প্রয়োগ এবং একটি কার্যকর বাজার ব্যবস্থাপনা প্রয়োজন। চাহিদা এবং যোগানের মধ্যে ভারসাম্য নিশ্চিত করতে নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন জরুরি।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পরিচালক ফকির মুহাম্মদ মুনাওয়ার হোসেন বলেন, ভোক্তার নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতের জন্য আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিতের পাশাপাশি সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি প্রয়োজন। আর সামাজিক সচেতনতার জন্য সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
বিএসটিআই পরিচালক সাইফুল ইসলাম বলেন, 'খাদ্য সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য সামাজিক আন্দোলনের বিকল্প নেই। আর এই সামাজিক আন্দোলনের জন্য রাজনৈতিক সদিচ্ছা (পলিটিক্যাল অ্যাক্টিভিটি) প্রয়োজন। কারণ, আমরা সরকারি কর্মচারী, আমাদের নিজস্ব কোন শক্তি নেই। আইনে যা আছে, তাই করতে হয়।'
সভাপতির বক্তব্যে ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট হুমায়ূন কবির ভূইয়া বলেন, ক্যাব, ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তর বা নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ, সবাই খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করছে। কিন্তু তারপরও এটা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। তবে খাদ্য নিরাপত্তার বিষয়ে আমাদের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
কনজুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) এবং ফ্রেন্ডস ইন ভিলেজ ডেভেলপমেন্ট বাংলাদেশ'র (এফআইভিডিবি) যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এ সেমিনারে কারিগরি ও আর্থিক সহায়তা করে ওয়েল্টহাঙ্গারহিলফি।
বিডি প্রতিদিন/মুসা