দীর্ঘজীবন বা ‘লংজিভিটি’ নিয়ে কাজ করা বিশেষজ্ঞ ড. জোসেফ এ্যান্টুন বলছেন, আমাদের দৈনন্দিন খাদ্যাভ্যাসেই লুকিয়ে রয়েছে দীর্ঘায়ুর চাবিকাঠি। তাঁর মতে, অতিরিক্ত প্রাণিজ প্রোটিন শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে, কারণ এটি ইনসুলিন-লাইক গ্রোথ ফ্যাক্টর-১ (IGF-1) হরমোনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়, যা দীর্ঘমেয়াদে আয়ু কমাতে পারে।
বেশি প্রোটিন কেন ক্ষতিকর?
প্রাণিজ প্রোটিনে লিউসিন ও আর্জিনিনের মতো কিছু অ্যামিনো অ্যাসিড বেশি থাকে, যা IGF-1 হরমোন সক্রিয় করে। এই হরমোন শৈশব ও কৈশোরে পেশি গঠনে সহায়ক হলেও পরবর্তী জীবনে অতিরিক্ত মাত্রায় থাকলে তা বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন জটিলতা ও বিপাকজনিত সমস্যার ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
বয়স অনুযায়ী খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন কেন জরুরি?
৩০ বছরের নিচে ও ৬৫ বছরের পরে:
এই বয়সে শরীরের পেশি রক্ষা করা গুরুত্বপূর্ণ। তাই ড. এ্যান্টুন পরামর্শ দেন, অল্প পরিমাণ প্রাণিজ প্রোটিনসহ শাকসবজিভিত্তিক খাদ্য গ্রহণের। যেমন: শাকসবজি, ফলমূল, বাদাম ও সামান্য পরিমাণ মাংস।
৩০ থেকে ৬৫ বছর বয়স:
এই সময়ে মূলত উদ্ভিজ্জ উৎস থেকে প্রোটিন নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। ডাল, বিনস, বাদাম ও বীজ জাতীয় খাবার হৃদরোগ ও প্রদাহ কমাতে সহায়তা করে।
কোন ডায়েট বেশি কার্যকর?
ড. এ্যান্টুন সুস্থ বার্ধক্যের জন্য নিচের ডায়েটগুলোর প্রশংসা করেন:
ভেগান ডায়েট: সম্পূর্ণ উদ্ভিদনির্ভর খাবার
ফ্লেক্সিটারিয়ান ডায়েট: মাঝে মাঝে অল্প প্রাণিজ খাবার
মেডিটেরিয়ান ডায়েট: ফলমূল, শাকসবজি, জলজ প্রোটিনসমৃদ্ধ
পেসকেটারিয়ান ডায়েট: মাছভিত্তিক খাদ্যাভ্যাস
সব প্রাণিজ প্রোটিন এক নয়
ড. এ্যান্টুন মনে করিয়ে দেন, ‘রেড মিটে স্যাচুরেটেড ফ্যাট বেশি, যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। তবে মাছে থাকে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, যা শরীরের জন্য তুলনামূলকভাবে উপকারী।’ তাই প্রোটিন গ্রহণের সময় উৎসটা গুরুত্বপূর্ণ।
তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া