ওয়াকফ আইন নিয়ে বিরোধের জেরে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদে দুজনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল ভোরে সমশেরগঞ্জে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ জানিয়েছে, সকালে দুজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতদের নাম গাজল দাস (৪৫) ও চন্দন দাস (২০)।
পরিবারের লোকদের অভিযোগ, দুর্বৃত্তরা তাদের বাসায় ঢুকে লুটপাট চালায়। এ সময় বাবা ও ছেলে বাধা দিতে গেলে তাদের ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনার ব্যাপারে তৃণমূল কংগ্রেসের নারী সংসদ সদস্য কাকলি ঘোষ দস্তিদার বলেন, ‘খুবই দুঃখজনক ঘটনা। এমন ঘটনা কাঙ্ক্ষিত নয়। এই আইনের বিরুদ্ধে আমরা রাত দিন প্রতিবাদ করে আসছি। এমনকি আমাদের নেত্রী মমতা ব্যানার্জিও জানিয়ে দিয়েছেন এই আইন বাংলায় লাগু হবে না।’
তৃণমূলের সিনিয়র সংসদ সদস্য সৌগত রায় বলেন, ‘এই আইন নিয়ে মুসলিমদের মধ্যে অনেক দুঃখ আছে। একটা আবেগ কাজ করছে। সেই কারণে স্বতপ্রণোদিতভাবে ঘটনাগুলো ঘটছে। তাই মুসলিম সমাজের প্রতিনিধিদের নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বৈঠক ডেকেছেন।’
প্রসঙ্গত, ওয়াকফ আইনের বিরোধিতায় গোটা ভারতেই বিক্ষোভ, প্রতিবাদে শামিল হচ্ছেন মুসলিম সমাজের একাংশ। কয়েকদিন ধরে কলকাতাসহ পশ্চিমবঙ্গের একাধিক জেলায় পথে নেমেছেন মুসলিমরা। আলাদা করে প্রতিবাদ করছে তৃণমূল কংগ্রেস ও বিরোধী বামেরা। কিন্তু এই বিক্ষোভ, প্রতিবাদ কোথাও কোথাও সহিংসতায় রূপ নিয়েছে। আইনের প্রতিবাদে সবচেয়ে উত্তাল পরিস্থিতি বিরাজ করছে মুসলিম অধ্যুষিত রাজ্যটির মুর্শিদাবাদ জেলায়। গত মঙ্গলবারের পর শুক্রবার এই জেলার সুতি, সমশেরগঞ্জ এলাকায় সড়ক অবরোধ, পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ছোড়া, বাইক ও গাড়িতে অগ্নিসংযোগ, ট্রেন লক্ষ্য করে পাথর নিক্ষেপ, এমনকি গুলি চালানোর মতো ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে বিএসএফকে নামানো হয়। সহিংসতা ছড়ানোর অভিযোগে ১১৮ জনকে গ্রেপ্তারও করে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
এমন পরিস্থিতিতে রাজ্যের মানুষকে শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। এমনকি ওয়াকফ আইনের বিরোধিতা করে মুসলিম সমাজের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন মমতা। তার স্পষ্ট বার্তা, কোনোভাবেই এ রাজ্যে ওয়াকফ আইন চালু করতে দেওয়া হবে না।’