নরসিংদীর রায়পুরার চরাঞ্চলের শান্তি-শৃঙ্খলা ও উন্নয়নে বৈষম্য নিরসনের দাবিতে জনসভা করেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ রায়পুরা উপজেলা দক্ষিণ শাখা। এসময় যুগ যুগ ধরে চলে আসা রক্তক্ষয়ী টেঁটা যুদ্ধ বন্ধের দাবিতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েছে চরাঞ্চলের সর্বস্তরের জনগণ। একই সাথে দুর্গম চরাঞ্চলগুলোকে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে নতুন থানা স্থাপন, চর এলাকায় মেঘনা সেতু নির্মাণ ও বৈষম্যমুক্ত রায়পুরার দাবি জানান তারা।
আজ শনিবার (২৬ এপ্রিল) বিকেলে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ রায়পুরা উপজেলার দক্ষিণ শাখার উদ্যোগে আয়োজিত সমাবেশে এ দাবি তোলা হয়।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ রায়পুরা দক্ষিন শাখার সভাপতি মাওলানা লিয়াকত আলী সায়দাবাদীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক বরকত উল্লাহর সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সাজেদুল্লাহ সায়েম, নুরে আলম সিদ্দিকী,ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নরসিংদী জেলার সহ সভাপতি ও মহিষাশুরা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মুফতি কাওছার আহমাদ ভুইয়া, বিএনপি নেতা এডভোকেট জসিম উদ্দীন আহমাদ, জসিমুদ্দীন জাহাঙ্গীর, রায়পুরা পূর্বাঞ্চল জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা জাহাঙ্গীর আলম, ফরিদ মিয়া, মিজান শিকদার, বিল্লাল হোসেন মাখন, দানা মিয়া, নুরুল হক মিয়া, হযরত আলী মাস্টার, ডাক্তার আক্তার মাস্টার, আলফাজ উদ্দীন মাস্টার, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস নেতা মাওলানা সাঈদ আহমাদ, মাওলানা সিরাজুল ইসলামসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বৈষম্যমুক্ত রায়পুরা উন্নয়ন আন্দোলন এর সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ বদরজ্জামান বলেন, 'আমাদের নেতারা পরিকল্পিতভাবে চরাঞ্চলে ঝগড়া লাগিয়ে সুবিধা নেন। একদিকে লাশ পড়ে অন্যদিকে তারা হাতিয়ে নেন টাকা। টেঁটাযুদ্ধ, বাড়িঘরে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ চরাঞ্চলের নিত্য ঘটনা। আমরা এই অপসংস্কৃতি বন্ধ চাই । এর জন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। কেউ যেন আমাদের নিয়ে স্বার্থের খেলায় মেতে উঠতে না পারে, আমাদের সবাইকে এ জন্য সজাগ ও সচেতন হতে হবে। একতার মাধ্যমে আমাদের দাবি আদায় করব এবং চরাঞ্চলে শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করব।'
তিনি সরকারকে উদ্দেশ্য করে আরও বলেন, 'চরাঞ্চলের দুই লক্ষ মানুষের জীবনের যেন কোন দাম নেই, তাদের সময়ের মূল্য নেই। এ অঞ্চলের হাজার হাজার প্রবাসী রক্ত পানি করে দেশে রেমিট্যান্স পাঠান, কৃষকরা ফসল উৎপাদন করে দেশের খাদ্য চাহিদা মেটান। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, এতকিছুর পরও এই অঞ্চলের মানুষ শান্তি ও উন্নয়নের সুবিধা থেকে বঞ্চিত। স্বাধীনতার পর থেকে চরাঞ্চলের ছয় ইউনিয়নের জনগণ তাদের অধিকারের কথা বলে আসছেন, কিন্তু আজও এর বাস্তবায়ন হচ্ছে না। অতীতে যারা রায়পুরার জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছেন তারা প্রতিবারই চরাঞ্চলের মানুষের সাথে প্রতারণা করেছেন। নির্বাচনের আগে নানা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, পরে ভুলে গিয়েছেন। চরের মানুষ তাদের চেহারাও আর দেখতে পায় না।'
এসময় সমাবেশে বক্তারা বলেন, চরাঞ্চল গুলোতে আইন শৃংখলাবাহিনির সরব উপস্থিতি থাকলে চরাঞ্চলের পরিস্থিতি শান্ত রাখা যাবে। একই সাথে কমে আসবে দুই দল গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষ। তাই চরাঞ্চলগুলোতে থানা স্থাপনের দাবি করা হয়। সেই সাথে বক্তারা চরাঞ্চলের চাঁনপুর, চরমধুয়া ও মির্জাচর সংযোগ সেতু নির্মাণ ও নদী ভাঙ্গন রক্ষায় টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ করার দাবি তুলে ধরেন।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল