হবিগঞ্জ জেলা পরিষদ অডিটরিয়াম এলাকায় কেটে ফেলা হয়েছে শতবর্ষী গাছসহ বেশ কয়েকটি বড় বড় গাছ। যা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকসহ পরিবেশদাবীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। অনেকেই গাছ কাটার এমন ঘটনাকে ভিন্ন চোখে দেখে জড়িতদের শাস্তির দাবি করছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। শুক্রবার বিকেলে শহরের জেলা পরিষদ অডিটরিয়াম প্রাঙ্গণ এলাকায় গাছগুলো কাটা হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শতবর্ষী পুরনো এই গাছগুলো এত দিন পরিবেশ রক্ষা ও সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে সহায়তা করেছে। জেলা পরিষদ অডিটরিয়ামের পার্শ্ববর্তী বৃন্দাবন সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা ক্লাসের ফাঁকে এসব গাছের নিচে অবসর সময় কাটাতেন। এছাড়াও নানা প্রজাতির পাখির অভয়ারণ্য ছিল এসব গাছ। কিন্তু হঠাৎ করেই ওই এলাকায় ৯টি গাছের মধ্যে ৫টি গাছ কেটে ফেলা হয়েছে।
গাছগুলোর বেশিরভাগই পুরনো ও বৃহৎ আকৃতির, যেগুলো পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছিল। সূত্র জানায়, হবিগঞ্জ জেলা পরিষদ গাছগুলো কাটার জন্য নিলাম দিয়েছিল। নিলামের কার্যাদেশ অনুযায়ী গাছগুলো কাটা হচ্ছিল। গাছগুলো কাটার দৃশ্য সচেতন এলাকাবাসীর নজরে এলে তারা তাতে বাধা দেন। পরে বন্ধ করা হয় গাছ কাটা। স্থানীয়দের দাবি, যারা শতবর্ষী এমন গাছ কাটার সাথে জড়িত তাদেরকে যেন আইনের আওতায় আনা হয়।
যদিও জেলা পরিষদ সূত্র থেকে জানা গেছে, অডিটরিয়ামের বাউন্ডারি ওয়াল রক্ষার জন্য গাছ কাটার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি পরিষদের মাসিক সভায় উপস্থিত কর্মকর্তারা এই সিদ্ধান্ত নেন। সে অনুযায়ী শুক্রবার ৯টি গাছের মধ্যে বড় বড় ৫টি গাছ কেটে ফেলা হয়। গাছ কাটার খবর শুনে পরিবেশকর্মী, ছাত্রছাত্রী ও স্থানীয় সচেতন এলাকাবাসী জেলা পরিষদ অডিটরিয়ামে গিয়ে অবিলম্বে গাছ কাটা বন্ধের দাবি জানালে তা বন্ধ করা হয়। তবে ততক্ষণে ৫টি বিশাল আকৃতির গাছ কেটে টুকরো টুকরো করা হয়।
পরিবেশকর্মী সৌরভ আহমেদ বলেন, গাছ আমাদের পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখে। যে এলাকায় গাছগুলো কাটা হয়েছে তাতে নানা প্রজাতির পাখির বসবাস ছিল। সাধারণ মানুষ ও ছাত্রছাত্রীরা সেখানে গিয়ে অবসর সময় কাটাতো। গাছগুলো কাটার ফলে এখন সেই এলাকার পরিবেশের চিত্র ভিন্ন হয়ে গেছে। গাছগুলো কাটা একেবারেই ঠিক হয়নি। মোস্তাক আহমেদ বলেন, সামান্য অজুহাত দেখিয়ে গাছ কাটা আমাদের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। তা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে।
পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)’র হবিগঞ্জ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল সোহেল বলেন, সরকার যেখানে পরিবেশ সংরক্ষণে নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে, সেখানে একটি সরকারি স্থাপনায় শতবর্ষী গাছ কেটে ফেলার সিদ্ধান্ত দুঃখজনক। আমরা চাই এই গাছগুলো যেন আর না কাটা হয়। আর যেগুলো কাটা হয়েছে তার জন্য বিচার দাবি করছি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে হবিগঞ্জ জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম বলেন, গাছ কাটা আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে। দেয়াল সম্প্রসারণ করার জন্য গাছ কাটা হয়েছিল।
বিডি প্রতিদিন/এএ