গ্রামীণ সংস্কৃতিকে ধরে রাখতে এবং কৃষিকে আধুনিকায়নের লক্ষ্যে বৈশাখকে স্বাগত জানাতে নেত্রকোনায় কৃষি প্রতিবেশবিদ্যা ও গ্রামীণ সংস্কৃতির লুতপিঠা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার নেত্রকোনা জেলা সদরের কাইলাটি ইউনিয়নের কাইলাটি গ্রামে এই উৎসবের আয়োজন করা হয়।
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিকের সহযোগিতায় কাইলাটি নবযাত্রা কৃষক সংগঠন ও সবুজ সংহতি টিমের আয়োজনে লুত পিঠা উৎসব, গ্রামীণ খেলাধুলা অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়াও কৃষি প্রতিবেশবিদ্যা ও গ্রামীণ সংস্কৃতি নিয়ে গ্রাম আলোচনায় অংশ নেন শহর-গ্রামের সমন্বয়ে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।
কৃষকদের সংগঠন নবযাত্রা’র সভাপতি মো. নূরুল ইসলামের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন শিক্ষা-সংস্কৃতি-পরিবেশ ও বৈচিত্র্য রক্ষা কমিটির সভাপতি, আবু আব্বাছ ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক নাজমুল কবীর সরকার, কৃষি উপসহকারী তামান্না আক্তার, প্রাণিসম্পদ সহকারী কর্মকর্তা তারেক আল-হাসান, বারসিকের আঞ্চলিক সমন্বয়কারী মো. অহিদুর রহমান, সহকারী সমন্বয়কারী শংকর ম্রং, লেখক গবেষক সোহরাব উদ্দিন আকন্দ, প্রকৌশলী রোদসী চক্রবর্ত্তী, সবুজ সংহতির মির্জা হৃদয় সাগর, হিমু পাঠক আড্ডার সদস্য সাংবাদিক তানভীর হায়াত খান প্রমুখ।
গ্রামের নারী-পুরুষ, শিশুসহ বিভিন্ন বয়সের শতাধিক মানুষ উৎসবে অংশ নেন। তারা বলেন, এক সময়ের গ্রামের ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলা ও সংস্কৃতি ছিল শিশু-কিশোরদের মধ্যে— কানামাছিভোঁভোঁ, গোল্লাছুট, গুডুলা, বৌচি, কুতকুত, দাড়িয়াবাঁধা, ডাংগুলি, মোড়গের লড়াই, মার্বেল, হা-ডু-ডু, কাবাডি, ষাঁড়ের লড়াই, হাড়িভাঙা, লুকোচুরি, দড়ি লাফ, এক্কা-দোক্কা, আগডুম-বাগডুম এমন কত ধরনের খেলাধুলা; যা এখন আর চোখে পড়ে না।
নানা ধরনের আয়োজন করে পিঠা বানানো হতো, যার মধ্যে অন্যতম ছিল লুত পিঠা বা লুট পিঠা। নতুন ধান উঠলে বাইরে মাটির চুল্লি করে তিন ঘণ্টা সময় নিয়ে পুড়ানো হতো বিশাল এ পিঠা। পরে সবাই একসাথে বিয়ের আসরের মতো এক থালায় করে কেটে কেটে খেতে পারতো।
এ সকল সংস্কৃতিগুলো মানুষের মাঝে সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতিকে অটুট রাখতো। এখন হারিয়ে যাওয়া এই সংস্কৃতি পুনরুদ্ধারের বিকল্প নেই বলে জানান আয়োজকরা। তারা বলেন, কৃষির সাথে এসবের সম্পৃক্ততা গভীর। এ কারণে এগুলোকে সামনে নিয়ে আসার জন্যই এমন আয়োজন।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল