ফেনী শহরের বড় বড় শপিংমলগুলোর পাশাপাশি ফুটপাতেও ঈদের কেনাকাটা জমে উঠেছে। শহরের দীঘিরপাড় এলাকায় ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে নিম্নবিত্ত মানুষদের এই ঈদ বাজার এখন সরগরম। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ব্যস্ত সময় পার করছেন ফুটপাতের ঈদ বাজারের ব্যবসায়ীরা।
সরেজমিনে নিম্নবিত্ত মানুষদের এই ঈদ বাজার গিয়ে দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র। নিম্নবিত্তের ঈদ বাজারে এখন ভিড় করছেন মধ্যবিত্তরাও। সবাই সবার সামর্থ্য অনুযায়ী প্রিয়জনের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য কেনাকাটা করছে।
শহরের বাসিন্দা রাজিয়া বেগম নামে এক গৃহকর্তী বলেন, মার্কেটে এখন ১ টাকার জিনিস ১০ টাকায় বিক্রি করে। এইজন্য এখান থেকে কিনতে এসেছি। এখানেও দাম বেশিতে বিক্রি করছে। টাকাতো হিসাবের, হিসাবের টাকার বাহিরে জামা কিনলে সংসার খরচে টানাটানি পড়ে যাবে। মেয়ে দুইটাকে দুইটা জামা কিনে দিতে পারলেই হয়। নিজের পোশাকের কথা বলাতে তিনি বলেন আমার আগের আছে, নতুন লাগবে না।
রাজাঝির দীঘির পাড়ে মার্কেট করতে আসা এনজিও কর্মী শাহাদাত সাজু নামে একব্যক্তি বলেন, ‘টাকা থাকুক আর না থাকুক, ছেলে মেয়ের ঈদের জামা-কাপড় না কিনলে কি হয়’। মাসের শেষ সময় এখন। হাতে টাকা কম। ঈদ আইসা পড়তাছে, যেমন পারি সবাইরেই কিছু না কিছু কিনা দিমু।
দীঘির পশ্চিম পাড়ে জুতার দরদাম করছিলেন শহরের বাসিন্দা নাছিমা আক্তার। তিনি বলেন, ‘শোরুমে ঢুকলেই বিশাল একটা দাম বলে। দরদাম করতেও লজ্জা পাইতে হয়। এর চেয়ে ফুটপাতই ভালো। এখানেও শুরুতে দাম বেশি বলে; কিন্তু দরদাম কইরা অর্ধেকের কমে নামানো যায়।’
ফুলগাজী থেকে আসা এক মাদ্রাসা শিক্ষক বলেন, পরিবারের জন্য পোশাক কিনতে এসেছি, কিন্তু বড় মার্কেটে দাম বেশি হওয়ায় দীঘির পাড়ে কেনাকাটা সেরে নিচ্ছি। আমাদের সাধ আছে, সাধ্য নেই। বড় মার্কেটে গেলে হিসেব মেলে না। এখানে ৩ ছেলে মেয়ের জন্য ২ হাজার টাকা দিয়ে কোনোরকম কেনাকাটা করা যাবে।
ফুটপাতের ব্যবসায়ীরা জানায়, চাঁদরাত পর্যন্ত তাদের ব্যবসা চলবে, এরপর তারা ঘরে ফিরবেন। এভাবে ফুটপাতের ঈদ বাজার হয়ে উঠেছে সাশ্রয় ও ভরসার জায়গা, যেখানে সাধারণ মানুষ তুলনামূলক কম দামে ঈদের বাজার করে উৎসবের আনন্দ বাড়িয়ে নিতে পারেন।
দীঘির পাড়ে ফুটপাতের বিক্রেতা আউয়ুব আলী বলেন, শুধু নিম্নবিত্ত নয়, মধ্যবিত্তরাও আমাদের কাছ থেকে পোশাক কিনছেন। তবে এখনও বিক্রি কম, শেষ সময়ে কিছুটা বাড়তে পারে।
অপর বিক্রেতা নুর হোসেন বলেন, এখন শিশুদের পোশাক কিছুটা বিক্রি হচ্ছে কিন্তু বড়দের পোশাক বিক্রি কম। এখানে দাম কম হওয়ায় নিম্নবিত্ত ছাড়াও বর্তমানে মধ্যবিত্তদেরও বেশ ভিড় বেড়েছে।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল