ফরিদপুরের ভাঙ্গার তুজারপুর ইউনিয়নের জান্দী গ্রামে চলছে শোকের মাতম। সন্তানের কথা মনে করে বারবার কান্নায় ভেঙে পড়ছেন সাগরের মা সুফিয়া বেগম। ৫০ বছর বয়সী এই নারী তার সন্তানের শোকে ছটফট করছেন।
বারবার তিনি কান্না জড়িত কণ্ঠে বলছেন, ‘আমার সাগররে আইনা দাও, ও তো আর ফোনে কথা কয় না। ওর মুখ খান আর একবার দেখতে চাই।’
সাগর ২০২৪ সালের নভেম্বর মাসের ৭ তারিখ ভাগ্যের অন্বেষণে বাংলাদেশ ছেড়ে সৌদি আরবে গিয়েছিল। ভাগ্যের নির্মম পরিহাস মঙ্গলবার দুপুরে সৌদি আরবের দাম্মাম শহরে একটি কন্টেইনার থেকে লোহার স্ট্রাকচার নামাতে গিয়ে ওই মালের নিচে চাপা পড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান। এ খবর গ্রামের বাড়িতে পৌঁছালে শোকে ভেঙে পড়ে তার পরিবারসহ পুরো এলাকাবাসী। সাগরের বাবা লতিফ মাতুব্বরের ৬ সন্তানের মধ্যে সাগর চতুর্থ। সবার প্রিয় সাগরের মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছেন তার বাবা এবং পরিবারের সকলে।
বুধবার বেলা ১১টার দিকে সাগরের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, সাগরের পরিবার, আত্মীয়-স্বজন এবং এলাকাবাসীর মধ্যে হাহাকার চলছে। সাগরের অকাল মৃত্যু তারা কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না।
সাগরের বড় ভাই গিয়াস উদ্দিন মাতুব্বর জানান, ‘আমাদের পরিবারের সবার প্রিয় ছিল সাগর। সাগরের মর্মান্তিক মৃত্যুতে আমরা দিশেহারা হয়ে পড়েছি। আমার মা এবং বাবাকে কোনোভাবেই সান্ত্বনা দিতে পারছি না। প্রথমে শুনেছিলাম একটি বহুতল ভবনে কাজ করতে গিয়ে সেখান থেকে পড়ে মারা গেছে। পরে জানতে পারি, মালামাল খালাস করার সময় লোহার খাঁচার নিচে পড়ে আমার ভাই মারা গেছে। সরকারের কাছে দাবি, যে কোনো মূল্যে আমার ভাইয়ের লাশ আমরা বাংলাদেশে আনতে চাই এবং আমাদের বাড়িতেই দাফন করতে চাই। ভাইয়ের মুখ আবার দেখতে চাই’। কথাগুলো বলে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন।
তুজারপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য জান্দী গ্রামের বাসিন্দা টিপু মোল্লা বলেন, সাগরের পরিবার অনেক কষ্ট করে তাকে সৌদি আরব পাঠিয়েছিল। কাজ করতে গিয়ে সে মারা গেছে। তার পরিবার ও এলাকাবাসীর দাবি, সাগরের লাশ বাংলাদেশে আনার ব্যাপারে সরকার যেন ভূমিকা রাখে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই