যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালীতে নিজের ছোট্ট একটা নার্সারি থেকে ১৯৮২ সালে পরীক্ষামূলকভাবে রজনীগন্ধা ফুলের চাষ শুরু করেছিলেন। ভালো দাম পাওয়ায় ফুল চাষের পরিধি ধীরে ধীরে বাড়াতে থাকেন। গ্রামের লোকজনও ঝুঁকতে শুরু করেন ফুল চাষের দিকে। বুদ্ধি, অভিজ্ঞতা, পরামর্শ, ফুলের বীজ ও চারা দিয়ে তাদের সহযোগিতা করেন।
সেই গদখালী ও আশপাশের ৭০টি গ্রামে সাড়ে ৬ হাজার হেক্টর জমিতে আজ নানারকম বাণিজ্যিক ফুলের চাষ হচ্ছে। সরাসরি ৬ হাজার কৃষক এখন ফুলচাষের সাথে জড়িত। আর বিভিন্নভাবে এই সেক্টরের সাথে জড়িয়ে আছে লক্ষাধিক মানুষের জীবন-জীবিকা। গদখালী এখন সারাদেশে ফুল-সাম্রাজ্য হিসেবে পরিচিত।
যার কারণে এতকিছু, দেশে বাণিজ্যিক ফুল চাষের পথিকৃৎ হিসেবে পরিচিত সেই শের আলী সরদার (৭৬) আর নেই। বুধবার সকাল ছয়টার দিকে যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার পানিসারা গ্রামে নিজ বাড়িতে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। দীর্ঘদিন ধরে তিনি নানা রোগে ভুগছিলেন।
গদখালী ফুলচাষী সমবায় সমিতির সভাপতি আব্দুর রহিম জানান, বুধবার দুপুরে ও বিকেলে পানিসারা গ্রামের পৃথক দুটি স্থানে দুই দফা জানাজা শেষে পারিবারিক করবস্থানে শের আলীকে দাফন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ফুল চাষে অনন্য অবদানের জন্য অসংখ্য পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন শের আলী। ঘুরেছেন ১৮টি দেশ। সেসব দেশের ফুল চাষ পর্যবেক্ষণ করে সে অভিজ্ঞতা ছড়িয়েছেন নিজের এলাকায়।
এদিকে শের আলী সরদারের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন যশোরের জেলা প্রশাসক মো. আজাহারুল ইসলাম। এক শোকবার্তায় তিনি বলেন, শের আলী সরদার ছিলেন একজন সফল উদ্যোক্তা, পরিশ্রমী, নিষ্ঠাবান ও সফল ফুলচাষী।
জেলা প্রশাসক বলেন, শের আলী সরদার উন্নত প্রজাতির গোলাপ, গ্লাডিওলাস ও জারবেরাসহ নানা প্রজাতির ফুলের চাষ শুরু করেন ও স্থানীয় চাষিদের ফুল চাষে আগ্রহী করে তোলেন। তার চেষ্টাতেই গদখালী আজ দেশের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্রে রূপান্তরিত হয়েছে এবং ফুলের রাজ্য হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। তিনি শের আলী সরদারের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন ও তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করেন।
বিডি প্রতিদিন/এমআই