মেহেরপুরের বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে তামাক চাষ করা হচ্ছে। শরীরের ও পরিবেশের ক্ষতি জেনেও অধিক লাভের আশায় এ বিষবৃক্ষ চাষে ঝুঁকছেন কৃষকরা। প্রতি বছর নতুন নতুন আবাদি জমি তামাক চাষে যুক্ত হচ্ছে। ফলে তামাক চাষি ও তার পরিবারের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে, জমির উর্বরা শক্তি হ্রাস পাচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন অনুযায়ী এ ফসল চাষের আগে অনুমতি নেওয়ার বিধান রয়েছে। তা উপেক্ষা করে তামাক চাষে ঝুঁকছেন কৃষকরা। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, তাদের কাছে জেলার তামাক চাষের কোনো ধরনের তথ্য নেই। অভিযোগ রয়েছে, বহুজাতিক কোম্পানি ব্রিটিশ-আমেরিকান টোব্যাকো, জাপান টোব্যাকো, আবুল খায়ের টোব্যাকো কোম্পানিসহ বিভিন্ন বিড়ি, সিগারেট ও জর্দা তৈরির প্রতিষ্ঠান তাদের নিজস্ব প্রতিনিধির মাধ্যমে স্থানীয় কৃষকদের তামাক চাষে উদ্বুদ্ধ করছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কোনো তৎপরতা না থাকার সুযোগ নিয়ে কৃষকদের এ ফসল চাষে উৎসাহ জোগাচ্ছে এসব টোব্যাকো কোম্পানি। মেহেরপুর সদর উপজেলার উজুলপুর মনোহরপুর, কুতুবপুর, রামনগরসহ বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে দেখা যায় অধিকাংশ কৃষক তামাক চাষ করেন। গত বছরও যেসব জমিতে সবজির সমাহার ছিল, এ বছর সেখানে এ বিষবৃক্ষের সমাহার। তামাক চাষি বাবর আলী, কবির, মসুদসহ অনেকেই জানান, তামাক ক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান থেকে তাদের বীজ, সার, কীটনাশক, ত্রিপল ও কাগজসহ উৎপাদনের যাবতীয় সামগ্রী সরবরাহ করা হয়ে থাকে। আবার তারাই তামাক পাতা কিনে নেয়। মেহেরপুর জেলায় মূলত আমেরিকান টোব্যাকো কোম্পানি ও জাপান টোব্যাকো কোম্পানি তামাক চাষে কৃষকদের সহযোগিতা দিয়ে থাকে, জানান তারা। তামাক চাষি ফজলুর রহমান জানান, তিনি দীর্ঘ একযুগ ধরে তামাক চাষ করছেন। তামাক চাষে অন্য ফসলের তুলনায় দ্বিগুণ লাভ হয়। তার মতে, এতে শরীরের ও পরিবেশের ক্ষতি হলেও লাভের অঙ্ক বেশি। তাই তামাক চাষ করেন। পাতার আকার ও সংরক্ষণের প্রকারভেদে কোম্পানি দাম কমবেশি নির্ধারণ করে। কোম্পানির লোক ছাড়াও অনেকে এসে তামাক কিনে নিয়ে যায়। মেহেরপুর জেলায় তামাক চাষে লগ্নিকারী প্রতিষ্ঠান ব্রিটিশ-আমেরিকান টোব্যাকো কোম্পানি ও জাপান টোব্যাকো কোম্পানির কেউ এ বিষয়ে বক্তব্য দিতে রাজি হননি। মেহেরপুরের পরিবেশকর্মী ডা. আবদুর রউফ জানান, তামাক চাষি ও তাদের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে তামাক মারাত্মক নিউরো-টক্সিক ইফেক্ট তৈরি করে। শরীরের দীর্ঘদিন এর প্রভাব থাকে। এ ছাড়া তামাক চাষ পরিবেশ ও প্রতিবেশের ওপর বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। এ ফসল চাষে ব্যবহৃত বিভিন্ন ধরনের সার ও কীটনাশক জমির উর্বরতা হ্রাস করে। বাংলাদেশ তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন অনুযায়ী তামাক চাষের আগে অনুমতি নিতে হয়। আমার জানা মতে, মেহেরপুরে তামাক চাষের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের অনুমতি নেওয়া হয় না। ডা. সজিবুল হক জানান, দীর্ঘদিন তামাক চাষে যুক্ত থাকলে ক্যানসার, পেটের পীড়া, ব্রংকাইটিস, অ্যাজমা, চর্ম, বুক ও ঘাড়ে ব্যথাসহ নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। এ ছাড়া তামাক চাষিদের সন্তানদের ‘গ্রিন টোবাকো সিনড্রোম’ নামে এক জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিজয় কৃষ্ণ হালদার বলেন, তামাক চাষের বিষয়ে সরকারিভাবে তাদের কোনো নির্দেশনা নেই। তামাক চাষ রোধে জনসচেতনতা সৃষ্টির পাশাপাশি সরকারেরও ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।
শিরোনাম
- ঈদ মৌসুমে টানা পাঁচ দিন বজ্রসহ বৃষ্টির পূর্বাভাস
- খালেদা জিয়ার সঙ্গে বিএনপি নেতাদের ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়
- জুলাই সনদ ঘোষণাপত্র ও লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে: হাসনাত আবদুল্লাহ
- যশোরে ককটেল হামলায় বিএনপি কর্মী নিহত
- কুষ্টিয়ায় দুই মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে প্রাণ গেল যুবকের
- বাগেরহাটে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ৪০
- ডিএসসিসির ৭৫ ওয়ার্ডে একযোগে বর্জ্য অপসারণ শুরু
- ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আরও ২৬ জন
- আইসিসির মাসসেরা খেলোয়াড় আমিরাতের ওয়াসিম
- ১৩২ হলে শাকিব খানের ‘তাণ্ডব’
- অস্ত্রোপচার শেষে কেমন আছেন অভিনেত্রী দীপিকা কক্কর?
- এবার বিরাট কোহলির বিরুদ্ধে মামলা
- কোরবানির মাংসের কেজি ৬০০ টাকা!
- চাঁদপুরে পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপিত
- ঈদযাত্রায় ছয়দিনে যমুনা সেতুতে ১৯ কোটির বেশি টাকা টোল আদায়
- বর্জ্যের কারণে ঢাকাবাসীর ঈদ আনন্দে বিঘ্ন ঘটবে না : আসিফ মাহমুদ
- রাজবাড়ীতে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত
- কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দিদের ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত
- আগামী ডিসেম্বরের আগেই নির্বাচন করা সম্ভব : ১২ দলীয় জোট
- ঈদের সকালে স্ত্রীর গলাকাটা লাশ উদ্ধার, স্বামী পলাতক
মেহেরপুর
তামাক চাষে ঝোক, বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি
শরীরের ও পরিবেশের ক্ষতি জেনেও অধিক লাভের আশায় করা হচ্ছে এর চাষ
মাহবুবুল হক পোলেন, মেহেরপুর
প্রিন্ট ভার্সন

টপিক
এই বিভাগের আরও খবর