ভারতের সুপ্রিম কোর্ট মোদি সরকারের বিতর্কিত ওয়াক্ফ সম্পত্তি সংশোধন আইন সাময়িক স্থগিত করেছেন। প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার নেতৃত্বাধীন একটি বেঞ্চ এ নির্দেশ জারি করেছেন। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী ঘোষিত ওয়াক্ফ সম্পত্তি বাতিল করা যাবে না এবং মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ওয়াক্ফ বোর্ডও বহাল থাকবে। সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্টভাবে জানায়, যে কোনো সম্পত্তি যদি আদালতে ওয়াক্ফ হিসেবে তালিকাভুক্ত থাকে, তাহলে সংশোধিত আইন নিয়ে শুনানি চলাকালে তা পরিবর্তন করা যাবে না। দান বা চুক্তির মাধ্যমে ওয়াক্ফ ঘোষিত যে কোনো সম্পত্তির ক্ষেত্রেই এই নির্দেশ কার্যকর হবে। আদালত আরও জানায়, কোনো সম্পত্তি ওয়াক্ফ নাকি সরকারি, সেই বিষয়ে তদন্ত চলাকালীন কালেক্টরের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে সেটিকে ওয়াক্ফ হিসেবে ধরা হবে না- যদিও সংশোধিত আইনে এমন উল্লেখ রয়েছে, তবে আপাতত সেই ধারা বলবৎ থাকবে না। এ ছাড়া, ওয়াক্ফ বোর্ড এবং কেন্দ্রীয় ওয়াক্ফ কমিটির সব সদস্যকে মুসলিম হতে হবে, আদালত তা পুনর্ব্যক্ত করেছে। তবে সরকারি কর্মকর্তা বা কোনো নির্দিষ্ট পক্ষের প্রতিনিধি হিসেবে যারা স্বয়ংক্রিয়ভাবে বোর্ডে জায়গা পান, তারা এই নিয়মের বাইরে থাকবেন। পাশাপাশি, হিন্দু ধর্মীয় ট্রাস্টে মুসলিমদের সদস্যপদ দেওয়া হয় কি না, তা কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে জানতে চেয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
সরকারের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা গতকাল আদালতে জানান, ভারত সরকার আপাতত কেন্দ্রীয় ওয়াক্ফ কাউন্সিলে এবং প্রাদেশিক কাউন্সিলে কোনো অমুসলিম সদস্য নিয়োগ করছেন না। আদালতে এই প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পর প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না, বিচারপতি সঞ্জয় কুমার এবং কে বি বিশ্বনাথের বেঞ্চ রায় ঘোষণা করে বলেছেন, ‘যেহেতু সলিসিটর জেনারেল বলেছেন সাত দিনের মধ্যে তাদের চূড়ান্ত মত জানাবেন, তাই আপাতত যেসব ওয়াক্ফ সম্পত্তি নথিভুক্ত রয়েছে তার কোনো অবস্থার পরিবর্তনের বিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে না। পরবর্তী শুনানি পর্যন্ত স্থানীয় কালেক্টর কোনো নোটিস জারি করতে পারবেন না। নতুন আদেশ না দেওয়া পর্যন্ত যারা ওয়াক্ফ সম্পত্তি আজ পর্যন্ত ব্যবহার করছেন তারা তেমনই করবেন। পরবর্তী শুনানি ৫ মে হবে।’