ঈদ এসেছে, তবে কোথাও খুশির প্রতিধ্বনি নেই। সাগরের জলেও নেই মাছ, কলাপাড়ার জেলে পল্লির হাসি-মুখ আর খুশির বার্তা এখন নিঃশেষিত। সাগর শান্ত, মাছ নেই। ঈদের আনন্দের মধ্যে এসে পড়েছে এক অসীম শূন্যতা। জাল ফেললেও মিলছে না ইলিশসহ নানা প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ। কর্মহীন হয়ে পড়েছে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার এবং সংশ্লিষ্টরা। দীর্ঘদিন ধরে সাগরে মাছের আকাল থাকায় এবার ঈদ উৎসব অনিশ্চিত হতে চলেছে জেলে পরিবারগুলোতে। তবে মৎস্য গবেষকরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাবে সাগর ও নদীতে মাছের প্রাপ্তি অনেক কম রয়েছে।
উপজেলার লতাচাপলী ইউনিয়নের পশ্চিম খাজুরা জেলে পল্লীর বাসিন্দা জেলে রাসেল হাওলাদার। জরাজীর্ণ একটি ঘরে পরিবারের চার সদস্য নিয়ে তার বসবাস। তিনি ৩ দফা সাগরে মাছ শিকারে গিয়ে খুবই কম সংখ্যক মাছ নিয়ে ফিরছেন। সেই মাছ বিক্রি করে যে টাকা পেয়েছেন, তা দিয়ে সংসারের বাজার খরচ চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন। শুধু জেলে রাসেলই নয়, একই অবস্থা ওই জেলে পল্লীর ১২৭ পরিবারসহ অধিকাংশ জেলের। অনেক জেলে ঋণগ্রস্ত। ফলে এই পল্লীর শিশু থেকে শুরু করে সবার চোখে মুখে হতাশার ছাপ লক্ষ্য করা গেছে।
জেলে সলেমান মাঝি বলেন, সাগর-নদীতে কোথাও মাছ নেই। কয়েকদিন আগে সাগর থেকে এসেছি, শুধুমাত্র তেল খরচ উঠেছে। বর্তমানে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছি। ঈদে বাচ্চাদের কোনো কিছু কিনে দেওয়ার সামর্থ্য নেই বলে তিনি জানান।
অপর এক জেলে হোসেন মিয়া বলেন, প্রায় ২০ হাজার টাকার মতো দেনা হয়েছি। সাগরে মাছ না থাকায় এ দফায় আর সাগরে যাওয়া হয়নি।
মহিপুর মৎস্য আড়ৎদার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সুমন দাস বলেন, দীর্ঘ বছর ধরে তিনি মৎস্য ব্যবসায় জড়িত। মাছের এমন সংকট কখনোই দেখেননি।
সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, জেলেদের সহযোগিতার বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে।
বিডি প্রতিদিন/আশিক