টানা বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে লালমনিরহাটে তিস্তা তীরবর্তী বিস্তীর্ণ এলাকায় সাময়িক বন্যার সৃষ্টি হয়। তবে বর্তমানে সে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙন। সাত দিনে তিস্তার ভাঙনে বিলীন হয়েছে ৩৭টি বসতবাড়ি। ভাঙনের মুখে রয়েছে আরও শতাধিক বসতবাড়ি বলে জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার। সরেজমিন দেখা যায়, তিস্তার ভয়াল ভাঙনে বিলীন হয়ে যাচ্ছে ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি। কেউ কেউ আগেভাগেই ঘরবাড়ি ভেঙে উঁচু স্থানে সরিয়ে নিলেও থাকার জায়গার অভাবে অনেক পরিবার নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে। ভাঙন ঠেকাতে পানি উন্নয়ন বোর্ড জিও ব্যাগে বালু ভরাট করে কাজ চালালেও তীব্র স্রোতে তা কার্যকর হচ্ছে না, অভিযোগ স্থানীয়দের। সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের কুটিপাড়া গ্রামের ভাঙনের শিকার শতবর্ষী সাইজন বেওয়া বলেন, তিনি সাতবার ভাঙনের শিকার হয়েছেন। এবার শেষ সম্বল ভিটামাটিও নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। বন্যা-পরবর্তী ভাঙনে সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের কুটিপাড়া, আদর্শ বাজার, রাজপুর ইউনিয়নের তাজপুর, চিনাতলি, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারি এবং হাতীবান্ধার সিন্ধুনা এলাকায় ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। আদিতমারীর গোবর্ধন গ্রামের ফারুক জানান, এখন পর্যন্ত পাঁচবার নদী ভাঙনের শিকার হয়েছি। শেষ সম্বল ৪ শতক জমির ওপর বাড়ি করেছিলাম। তাও এই বন্যায় ভেঙে গেল।
এদিকে পানি নেমে গেলে বানভাসিরা চর্ম ও চুলকানিসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। বন্যা আর নদী ভাঙনে জেলায় প্রায় ৯১৫ হেক্টর রোপা আমন ধান খেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
স্থানীয়দের দাবি, তিস্তার ভয়াবহ ভাঙনে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শ্রী সুনীল কুমার বলেন, জরুরি আপৎকালীন কাজের অংশ হিসেবে যেসব এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে সেখানে জিও ব্যাগে বালু ফেলে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা চলছে।