২৪ বছরেও কক্সবাজারের ডুলাহাজারা সাফারি পার্ক নানা কারণে পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠতে পারেনি। ২০০১ সালে প্রতিষ্ঠিত পার্কটির রুগ্ণদশা এখনো কাটেনি।
কক্সবাজার শহর থেকে ৪৭ কিলোমিটার উত্তরে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশেই ডুলাহাজারা সাফারি পার্ক। সংশ্লিষ্টরা জানায়, ১৯৮০ সালে এটি ছিল হরিণ প্রজননকেন্দ্র। ভিতর-বাইরে ৯০০ হেক্টর আয়তন নিয়ে যাত্রা করা পার্কে বিপুল পরিমাণ মাদার ট্রিসহ (গর্জন) রয়েছে নানা প্রজাতির বনজ গাছ। আছে বন্যপ্রাণী-পশুপাখি। সাম্প্রতিক সময়ে পার্কের প্রাণীগুলো একেবারে রুগ্ণদশা অবস্থায় রয়েছে। বনাঞ্চলে ঘেরা পার্কটির কিছু এলাকায় সীমানাপ্রাচীর নেই। অরক্ষিত সীমানা দিয়ে লোকজন ভিতরে ঢুকে গাছপালা নিধন এবং হরিণ ও শূকর শিকার করার অভিযোগ রয়েছে। বন্যহাতির দল অরক্ষিত সীমানায় এসে তাণ্ডব চালায়।
জানা গেছে, জানুয়ারি মাসে টেকনাফের পাহাড়ে প্রসবের সময় মা-হারানো এক দিন বয়সি একটি হাতির শাবক সাফারি পার্কে আনা হয়। বন্য প্রাণী হাসপাতালের কোয়ারেন্টাইন শেডে রেখে শাবকটিকে তরল দুধ (ল্যাকটোজেন) খাওয়ানোর নির্দেশনা দিয়েছেন চিকিৎসক। কিন্তু যথাযথ পরিচর্যার অভাবে এ কমাসে পুরুষ হাতি শাবকটি একেবারে দুর্বল হয়ে পড়েছে। এর খাদ্য দেওয়ার ক্ষেত্রেও অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। সংবাদকর্মীরা গিয়ে দেখতে পান, হাতি শাবকটির শরীরে কয়েকটি স্থানে ঘা। এ ছাড়া পঞ্চগড় সীমান্তে ধরা পড়া বিপন্নপ্রায় নীলগাইটি ও বান্দরবানের মেঘলা পর্যটন কমপ্লেক্সের মিনি চিড়িয়াখানা থেকে দুটি ভালুক ও ১৩টি মায়া হরিণসহ ২৩টি বন্যপ্রাণী ডুলাহাজারা সাফারি পার্কে আনা হয়েছে। পার্কের প্রাণিসম্পদ চিকিৎসক হাতেম সাজ্জাদ মো. জুলকারনাইন বলেন, ভালুক, মায়া হরিণ, বানরসহ সব প্রাণী আলাদা রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। সাফারি পার্কের ইনচার্জ মঞ্জুরুল আলম বলেন, দেশের প্রথম সাফারি পার্ক ডুলাহাজারা। বাইরে থেকে বালু উত্তোলনের কারণে গাইডওয়ালগুলো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। পশুগুলো ঠিকমতো খেতে না পাওয়াসহ অব্যবস্থাপনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি ‘মাত্র যোগদান করলাম’ বলে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। পার্কে সম্প্রতি কিছু পশুপাখি আনা হয়েছে-এসব বিষয়েও তিনি তথ্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন।