ঠাকুরগাঁওয়ে দিনদিন বেপরোয়া হচ্ছেন নদী দখলদাররা। নদী দখল করে নতুন নতুন বসতভিটা, দোকানপাট ও শিল্প-কারখানা গড়ে তোলা হচ্ছে। এতে নদীর গতিপথ বন্ধ হচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, জেলার ১৩টি নদীর দৈর্ঘ্য প্রায় ৪৯১ কিলোমিটার। পরিবেশবাদীদের অভিযোগ, দখলকারীদের কবলে পড়ে নদী হারিয়েছে জীবন্ত সত্তা। ঝুঁকিতে পড়েছে পরিবেশ। নদীদূষণসহ অবৈধ স্থাপনা তৈরি করায় মূল নদীর প্রবাহ অত্যন্ত সঙ্কুচিত হয়ে পড়ছে। যেন দেখার কেউ নেই। নদী রক্ষা আইন আছে, রয়েছে কঠোর শাস্তির বিধানও। কিন্তু আইনের প্রয়োগ না থাকায় বেপরোয়া হচ্ছেন দখলকারীরা। বছরের পর বছর এমন অবস্থা চলতে থাকায় প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্টের পাশাপাশি বেকার হয়ে পড়ছেন স্থানীয় জেলেরা। স্থানীয়রা বলছেন, জেলা শহরের পাশ দিয়ে বয়ে চলা টাঙ্গনের মতো প্রতিটি নদীই এখন ধুধু বালুর চর। বর্ষা কিংবা খরা মৌসুমে পানি শুকিয়ে জেগে উঠছে চর। টাঙ্গন, শুক ও সেনুয়াসহ ১৩টি নদীর তীরবর্তী এলাকায় অবৈধ দখলদাররা গড়ে তুলছে বসতভিটাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। এ অবস্থায় দখল আর সময়-অসময়ে অপরিকল্পিত খননে কোনোভাবেই প্রাণ ফিরছে না এসব নদীর। চর জেগে ওঠায় দিন দিন গতিপথ বন্ধের পাশাপাশি ছোট হয়ে আসছে নদীগুলোর সীমানা। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে জমি দখলে মরিয়া হয়ে উঠছেন দখলদাররা। স্থানীয়দের অভিযোগ, নদী দখল হতে থাকলেও অজ্ঞাত কারণে তেমন কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায় না পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের। ফলে দিন দিন নদীর সীমানা ছোট হয়ে পরিণত হচ্ছে মরা খালে। তারা আরও জানান, এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি নদীর জমি দখলকৃতদের তালিকা প্রণয়ন করা হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, জেলার ১৩টি নদীর দৈর্ঘ্য প্রায় ৪৯১ কিলোমিটার। এর মধ্যে তালিকাভুক্ত ৪৬০ জনের দখল করা জমির পরিমাণ সাড়ে সাত একর। অভিযান পরিচালনা করে ১৩৩ জনের দখল করা প্রায় তিন একর জমি উদ্ধার হয়েছে।
ঠাকুরগাঁও পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. গোলাম যাকারিয়া বলেন, তালিকা ধরে দখলকৃত জমি উদ্ধারে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। কয়েকটি কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সব জমি উদ্ধারে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।