পশ্চাদপদ গ্রামে এখনো সড়ক নেটওয়ার্ক গড়ে ওঠেনি। যাতায়াতে খালই তাদের ভরসা। বর্ষা মৌসুমে নৌকায় চলে যাতায়াত। শুষ্ক মৌসুমে খালপাড় দিয়ে হেঁটে গ্রামের মানুষ চলাচল করেন। বানারঝোড় গ্রামের জনগুরুত্বপূর্ণ এ খাল দখল করে বালু দিয়ে ভরাট করেছেন প্রভাবশালীরা। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার কান্দি ইউনিয়নের বানারঝোড় গ্রামের ৩ হাজারের অধিক মানুষ। দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে স্কুল-কলেজগামী ছেলেমেয়েরাও। জরুরি রোগী পরিবহনেও ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। এ ব্যাপারে কোটালীপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বানারঝোড় গ্রামবাসী। অভিযোগ বলা হয়েছে, কান্দি ইউনিয়নের বানারঝোড় গ্রামের ৩ হাজারের বেশি মানুষের চলাচলের একমাত্র খাল পাশর্^বর্তী টুঙ্গিপাড়া উপজেলার করফা গ্রামের প্রভাবশালী নুর ইসলাম শেখ ও তার ভাই সাবেক ইউপি সদস্য রফিক শেখ দখল করে নেন। তারা ১ ভোল্ট স্লুইচ গেটের সামনের অংশে বালু দিয়ে ভরাট করেছেন। এতে গ্রামবাসীর চলাচল, পণ্য পরিবহন ও ব্যবসাবাণিজ্যে খুবই সমস্যা হচ্ছে। এ ছাড়া অভিযুক্ত দুই ভাইয়ের বাধার মুখে খাল খনন করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। বানারঝোড় গ্রামের ভুক্তভোগী শওকত মল্লিক বলেন, গ্রামবাসীর চলাচলের কোনো রাস্তা নেই। বর্ষা মৌসুমে আমরা নৌকায় ও শুকনো মৌসুমে এ খালপাড় দিয়ে হেঁটে চলাচল করি। এ খাল প্রভাবশালী দুই ভাই দখলে নিয়ে বালু ভরাট করেছেন। এখন খালপাড় দিয়ে বালু ভেঙে চলাচল করা যাচ্ছে না। অন্যের জমির মধ্য দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। গ্রামের মানুষ নৌকা যেখানে নোঙর করেন, সেই জায়গা দখলে নিয়েছেন তারা। এ কারণে নৌকা নোঙর, পণ্য পরিবহন ও ব্যবসাবাণিজ্যে সমস্যা হচ্ছে। স্কুল-কলেজগামী ছেলেমেয়েরাও দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে। এ ছাড়া জরুরি রোগী পরিবহনে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। এ ছাড়া খাল খনন কাজেও তারা বাধা দিয়েছেন। আমরা এ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। অভিযুক্ত নুর ইসলাম শেখ বলেন, আমি কোনো সরকারি খাল দখল করিনি। আমার জায়গা বালু দিয়ে ভরাট করেছি। খাল খনন কাজে আমি বাধা দেইনি। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগ আনা হয়েছে। কান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তুষার মধু বলেন, বানারঝোড় গ্রামবাসীর চলাচলের একমাত্র মাধ্যম এই খাল। সরকারিভাবে খালটি খনন করার জন্য ঠিকাদার কাজ শুরু করলে করফা গ্রামের নুর ইসলাম শেখ ও তার ভাই সাবেক ইউপি সদস্য রফিক শেখ বাধা দেন। ঠিকাদার কাজ না করে চলে যায়।
কোটালীপাড়া ইউএনও (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. মঈনুল হক বলেন, গ্রামবাসীর লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। সরেজমিনে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।