সাতক্ষীরার তালায় দৈনিক কালের কণ্ঠ পত্রিকার উপজেলা প্রতিনিধি রোকনুজ্জামান টিপুকে ১০ দিনের কারাদণ্ডের ঘটনায় নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম (বিএমএসএফ)।
বুধবার দুপুরে তথ্য কমিশনে স্মারকলিপি প্রদান শেষে সংগঠনের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান আহমেদ আবু জাফর এ ঘোষণা দেন। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাকে নিঃশর্ত কারামুক্ত করা না হলে দেশব্যাপী কঠোর কর্মসূচিরও ঘোষণা দেয়া হয়।
এদিকে আগামীকাল বৃহস্পতিবার সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতারা সাতক্ষীরায় প্রতিবাদ সমাবেশে যোগ দেবেন। তথ্য কমিশনের পরিচালক এ কে এম আজিজুল স্মারকলিপি গ্রহণ করে নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য রফিকুল ইসলাম মিরপুরী, কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি আব্দুল হাকিম রানা, সহ সম্পাদক নুরুল হুদা বাবু, সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুদ রানা, আনিসুর রহমান লিমন, মারিয়া আক্তার সুমন খান প্রমুখ।
বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের পক্ষ থেকে কারাদণ্ডাদেশ দেওয়ার ঘটনার সাথে জড়িত উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) এবং উপজেলা প্রকৌশলী তথ্য অধিকার আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছে বলে মন্তব্য করে তাদের বিচার দাবি করা হয়। কেননা ওই সব কর্মকর্তারা রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুটেপুটে খাবার জন্য সাংবাদিকদের কণ্ঠ রোধ করতে চাচ্ছে। এটা হতে দেওয়া যাবে না। আমরা সাতক্ষীরায় যাব, জেলা প্রশাসন ও সাংবাদিকদের সাথে কথা বলে আদ্যোপান্ত জানবো।
সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, তালার ঘটনায় সাংবাদিকদের কণ্ঠরোধ করেছে প্রশাসনের একশ্রেণির দালাল। তারা কারাদণ্ড দিয়ে দুর্নীতি, অনিয়মকে উস্কে দেবার পাঁয়তারা করছে।
গত মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) দুপুরে তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শেখ মো. রাসেল এ রায় দেন।
জানা যায়, তালা উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্স ভবনের ৯ কোটি টাকার প্রকল্পের কাজে অনিয়ম দুর্নীতির তথ্য সংগ্রহ করতে যান সাংবাদিক রোকনুজ্জামান টিপু। এ সময় তালা উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী এম এম মামুন আলম তথ্য দিতে অস্বীকার করায় সাংবাদিকের সাথে কথাকাটি হয়। একপর্যায়ে সাংবাদিককে তথ্য জানার কে এমন প্রশ্ন করলে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনা উভয়পক্ষ তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানালে তিনি সরেজমিন উপস্থিত শ্রমিকসহ স্থানীয়দের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে এই রায় দেন।
বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের পক্ষ থেকে সাজানো নাটকের বিরুদ্ধে প্রশ্ন রাখা হয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালতস্থলে যারা ছিল তারা কি কেউ নিরপেক্ষ ছিল? মামলার সাথে জড়িত সকলেই ঠিকাদারের শ্রমিক এবং প্রশাসনের লোক। প্রশাসনের উচিত ছিল ঘটনার নিরপেক্ষতা বজায় রেখে ব্যবস্থা নেওয়া। কিন্তু তিনি তা না করে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে সাংবাদিকদের দীর্ঘদিনের দূরত্বের ঝাল মিটিয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন সাংবাদিকরা।
বিডি প্রতিদিন/এমআই