বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গত বছরের ১৭ জুলাই রাজধানীর মিরপুর ১০ নম্বর এলাকায় পুলিশের গুলিতে আহত হন বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজির (বিইউবিটি) সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী সৌরভ ইসলাম (২৭)। প্রথমে তাকে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে ইবনে সিনা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়। ইবনে সিনায় বাবা-মায়ের নাম-ঠিকানা পাল্টে ভর্তি করতে হয়েছে। কারণ সে সময় আওয়ামী লীগের লোকজন হাসপাতালে এসেও বিভিন্নভাবে হুমকি দিতে থাকে। তাদের ভয়ে চিকিৎসাও ঠিকমতো হয়নি। বর্তমানে রাজধানীর পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। মোবাইল ফোনে তার সঙ্গে কথা হলে অসহায়ত্ব ও দুর্বিষহ জীবনের কথা তুলে ধরেন রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার টেপামধুপুর ইউনিয়নের রাজীব শটিবাড়ি গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত মাদরাসা শিক্ষক মো. ওসমান গনির ছেলে গুলিবিদ্ধ সৌরভ ইসলাম। তিনি বলেন, আমি পড়াশোনার পাশাপাশি একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি করতাম। গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর চাকরিও চলে গেছে। চিকিৎসার খরচ চালাতে মায়ের সোনার গয়না এবং বাবার সঞ্চিত টাকা শেষ হয়ে গেছে। এমনকি ধারদেনা করেও চিকিৎসা চালিয়ে যেতে হচ্ছে। তিনি বলেন, চিকিৎসা বাবদ প্রতিদিন গড়ে আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা লাগছে। এর মধ্যে রয়েছে একটি জটিল ও ব্যয়বহুল ‘নিই রিপ্লেসমেন্ট সার্জারি’। যার জন্য প্রয়োজন প্রায় ৫ লাখ টাকা।
সৌরভ বলেন, আমি একটা ল্যাপটপ চেয়ে দরখাস্ত করেছিলাম যেন ফ্রিল্যান্সিং করে অন্তত কিছু আয় করতে পারি, কিন্তু সেটিও পাইনি। শুধু প্রশ্ন রাখতে চাই, আমি কি দেশের বোঝা হয়ে গেলাম। যে দেশের জন্য লড়লাম, সেই দেশ কি আমার পাশে দাঁড়াবে না।
সৌরভের বাবা বলেন, আমার ছেলে গণতন্ত্রের জন্য রাস্তায় নেমেছিল। কিন্তু আজ সেই সন্তানকে উন্নত চিকিৎসা দিতে না পেরে নিজেকে অপরাধী মনে হচ্ছে। সরকার বলেছে, আহতদের সহায়তা করবে, কিন্তু এখনো তেমনভাবে কেউ আমাদের পাশে দাঁড়ায়নি।