ঠিক সময়ে ফিরে এলেন বাংলাদেশের ফুটবলে প্রাণভোমড়া হামজা দেওয়ান চৌধুরী। গতকাল সকালেই তার ঢাকা পৌঁছানোর কথা ছিল। কিন্তু ফ্লাইট মিস করলেও পরে নিজের টাকায় টিকিট কেটে বিকালে উড়ে এসেছেন। এখানেই প্রমাণ মেলে মাতৃভূমির প্রতি টান ও দায়িত্ববোধ। অন্যরা হলে হয়তো অজুহাত দেখিয়ে আবার তারিখ পেছাতে পারতেন। হামজা তা করেননি, তিনি জানতেন বাংলাদেশের ফুটবলপ্রেমীরা তাঁর জন্য অপেক্ষা করছেন। ১৮ নভেম্বর ঢাকায় এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের ম্যাচ রয়েছে। এবারও এশিয়ান কাপে চূড়ান্ত পর্বে জায়গা করে নিতে পারেনি বংলাদেশ। গ্রুপে দুই ম্যাচ ড্র ও দুই হারে সম্ভাবনা শেষ হয়ে গেছে। এখন বাকি দুই ম্যাচ আনুষ্ঠাকিতা মাত্র।
ভারতের কাছে আনুষ্ঠানিকতা হলেও বাংলাদেশের কাছে এতটা গুরুত্বপূর্ণ যে, ফাইনাল ম্যাচে মুখোমুখি হচ্ছে। ভারতকে হারালে বাছাইপর্বের ব্যর্থতা শুধু দূর হবে না। বাংলাদেশের ফুটবল ফিরে পাবে নতুন প্রাণ। এক জয় হবে অনেক জয়ের সমান। ১৯৮০ সালের পর চূড়ান্ত পর্বে আর খেলা হয়নি লাল-সবুজের। ব্যর্থটা নিয়মে পরিণত হয়েছিল। এবারের বিষয়টি আবার আলাদা। বাছাইপর্বে হামজা খেলার পরও বিদায় নিতে হয়েছে। যা প্রবাসী এ ফুটবলারের জন্য লজ্জাকর। হামজা জানেন তার ওপর কতটা ভরসা রেখেছে ভক্তরা। নিজে উজাড় করে খেললেও অন্যদের নিষ্ক্রিয়তার আশা পূরণ হয়নি।
এ বেদনা অনেকটা কেটে যাবে ভারতকে হারালে। হামজাও জানেন দুই দেশের ম্যাচ ঘিরে দর্শকরা কতটা উত্তেজনায় থাকে। সুতরাং জেতার জন্য হামজা শুধু নিজে মরিয়া থাকবেন না পুরো দল যেন সেরাটা দিতে পারে সেই পরিকল্পনা এঁকেই মাঠে নামবেন। ভারতের আগে ১৩ নভেম্বর নেপালের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। যা পারফরম্যান্স ঝালাইয়ে কাজে লাগবে। হামজাও কোচকে প্রয়াজনে পরামর্শ দিতে পারবেন। হামজা নিজেও বলেছেন, ভারতকে হারিয়ে কিছুটা হলেও সান্ত্বনা দিতে চাই দর্শকদের। তিনিও ভারত ম্যাচকে গুরুত্ব দিচ্ছেন এতে প্রমাণ মেলে।
গতবার দেশে ফিরে সরাসরি অনুশীলনে নেমে পড়েছিলেন। গতকাল তা হয়নি। কারণ ফুটবলারদের অনুশীল ছিল না। সামিত সোম আসছেন আজ। ক্যাম্পে ডাক পেয়েছেন আরেক প্রবাসী কিউবা মিচেল। যা নাকি হামজাও চেয়েছিলেন। ভারতকে হারাতে জোরালো প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ। আজ হামজা যোগ দেওয়ার অনুশীলনে প্রাণ ফিরবে। কেউ কেউ বলছেন, কোচ তো অনেক পরীক্ষা করে দলের বারোটা বাজিয়েছেন। এবার হামজা, সামিত, জায়ান ও মিচেলকে শুরু থেকে খেলিয়ে দেখুক না ভারতের বারোটা বাজানো যায় কি না?