৫ থেকে ১৩ জুন পর্যন্ত ঈদুল আজহার টানা ১০ দিনের ছুটিতে সেবা দিয়েছে ৯৯৯। লম্বা ছুটির এই সময়ে অসংখ্য কল আসে। মারামারি বিষয়ে পুলিশি সেবা দেওয়া হয়েছে ৪ হাজার ১০২ জনকে। কাউকে আটকে রাখা বিষয়ে ১ হাজার ২১৪ জনকে এবং সন্ত্রাসী কার্যক্রম বিষয়ে সেবা দেওয়া হয়েছে ৯৯২ জনকে। পশুর হাটে চাঁদাবাজি, রাস্তায় চাঁদাবাজি, নদীতে চাঁদাবাজি, জোরপূর্বক পশু অন্য হাটে নিয়ে যাওয়া, অজ্ঞান-মলম পার্টি এবং শব্দদূষণ বিষয়ে ১ হাজার ২৭১ জনকে পুলিশি সেবা দেওয়া হয়েছে। ১৩ হাজার ৮৩১ জনকে পুলিশি সেবা; ৯৯৩ জনকে অ্যাম্বুলেন্স সেবা এবং ৭৯৫ জনকে ফায়ার সার্ভিসের সেবা দেওয়া হয়েছে। ১৫ হাজার ৬১৯ জনকে কোনো না কোনোভাবে সেবা দেওয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থেকে ২৮ মে রাত সাড়ে ৯টায় ৯৯৯-এ একজন ফোন করে জানান, তার ভাগনিকে ঢাকার শ্যামলী থেকে অপহরণ করা হয়েছে। মুক্তিপণ হিসেবে তিনি বিকাশে টাকা পাঠিয়েছেন। ঢাকার আদাবর থানাকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলা হয়। তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে নরসিংদীর পলাশ থানার ঘোড়াশালে কলারের অবস্থান শনাক্ত করা হয়। বিষয়টি জানিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বললে পলাশ থানা পুলিশ অপহৃত তরুণীকে একটি বাড়ি থেকে উদ্ধার করে।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থেকে ৩১ মে রাত ৯টায় এক ব্যক্তি ৯৯৯-এ ফোন করে জানান, ‘তিনি এনজেড ফেব্রিক্সে কাজ করেন। তার সহকর্মী সাভারের হেমায়েতপুরে ফ্যাক্টরি ভিজিটে গিয়ে অপহরণের শিকার হন। মুক্তিপণ হিসেবে চাইছে ৫০ হাজার টাকা। অপহৃত সহকর্মী তাকে ফোন করে দ্রুত টাকা পাঠাতে বলেছেন। ঢাকার কুড়িল বিশ্বরোডের বিআরটিসি বাস-স্ট্যান্ডের কাছে একটি বাসায় তাকে আটকে রাখা হয়েছে।’ তাৎক্ষণিকভাবে এ ব্যাপারে ঢাকার ভাটারা থানাকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়। তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে পুলিশ অপহৃতের অবস্থান শনাক্ত করে তাকে উদ্ধার করে।
ট্রিপল নাইন সংশ্লিষ্টরা বলছে, ২০১৭ সালের ১২ ডিসেম্বর সেবাটি চালুর পর থেকে চলতি বছরের ৩১ মে পর্যন্ত সাড়ে ৭ বছরে ৬ কোটি ৩১ লাখ ৩৪ হাজার ৩৯১টি কল এসেছে। এর মধ্যে ২১ লাখ ৬৭ হাজার ৮৮টি কল সরাসরি সমাধানযোগ্য ছিল। মোট কলের ২ কোটি ৭৬ লাখ ৩৮ হাজার ২১২টি কলের বিপরীতে কোনো না কোনোভাবে সার্ভিস দেওয়া হয়েছে। যা মোট কলের ৪৩.৭৮ শতাংশ। এ ছাড়া গত সাড়ে ৭ বছরে ৯৯৯-এ ৩ কোটি ৫৪ লাখ ৯৬ হাজার ১৭৯টি অপ্রয়োজনীয় কল এসেছে। যা মোট কলের ৫৬.২২ শতাংশ। বিরক্তকর কল ছিল ২৫ লাখ ৭৬ হাজার ৩২৩টি।
৯৯৯-এর প্রধান অতিরিক্ত ডিআইজি মহিউল ইসলাম জানান, জনগণের আস্থা ও বিশ্বাসের ভিত্তিতে এগিয়ে যাচ্ছে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯। আমাদের দক্ষ কর্মী বাহিনী ২৪ ঘণ্টা জনগণকে সেবাটি নিশ্চিত করার চেষ্টা করছে। তিনি জানান, ৯৯৯ একসঙ্গে ৮০টি ফোন কল রিসিভ করতে পারে। ফলে এই জরুরি নম্বরে অপ্রয়োজনে ফোন না করার অনুরোধ করছি। অপ্রয়োজনে কলের কারণ সত্যিকারের বিপদগ্রস্তকে সেবা পেতে বিলম্ব হবে। বিরক্তিকর ও অপ্রয়োজনীয় কলের জন্য ১ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে ছয় মাসের কারাদে র বিধান রয়েছে। আপাতত আমরা অযথা বা অপ্রয়োজনে ফোন করা ব্যক্তির নম্বর একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ব্লক করে রাখা হচ্ছে।