রাজধানীর গুলশানে পুলিশ প্লাজার সামনে ইন্টারনেট ব্যবসায়ী টেলি সুমন মিয়া ওরফে সুমনকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যার ঘটনায় হোতাসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। তারা হলেন- হত্যাকাণ্ডের হোতা ওয়াসির মাহমুদ সাঈদ ওরফে বড় সাঈদ (৫৯) এবং হত্যায় সরাসরি অংশ নেওয়া মামুন ওরফে বেলাল (৪২)।
র্যাব জানায়, গুলশানের বিভিন্ন মার্কেটের দোকানে চাঁদাবাজির বিষয় নিয়ে মেহেদী গ্রুপের সঙ্গে রবিন গ্রুপের সুমনের বিরোধের সৃষ্টি হয়। এর জেরে মেহেদী গ্রুপের প্রধান মেহেদীর নির্দেশে সুমনকে হত্যার পরিকল্পনা করেন বড় সাঈদ।
গতকাল দুপুরে র্যাব-১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মোহাম্মদ জাহিদুল করিম এসব কথা জানান। তিনি বলেন, মেহেদী কয়েক বছর ধরে বড় সাঈদের মাধ্যমে একটি সন্ত্রাসী বাহিনী গঠন করে গুলশান ও বাড্ডা এলাকায় চাঁদাবাজি করে আসছিল। মেহেদী তার বাহিনীর সদস্য বড় সাঈদের মাধ্যমে চাঁদা সংগ্রহ করত। কিন্তু সরকার পতনের পর অন্য একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ রবিন গ্রুপের হয়ে সুমন গুলশান ও বাড্ডা এলাকায় চাঁদাবাজি শুরু করে। এ নিয়ে মেহেদী গ্রুপের সঙ্গে রবিন গ্রুপের সুমনের বিরোধের সৃষ্টি হয়। র্যাব জানায়, বড় সাঈদ ঘটনার ৮-১০ দিন আগে সুমনকে হত্যার উদ্দেশ্যে বিল্লাল ও মামুনের নেতৃত্বে মেহেদী গ্রুপের ৪-৫ জন সন্ত্রাসী দিয়ে একটি কিলার গ্রুপ গঠন করে। মেহেদী গ্রুপের সদস্যরা প্রতিদিন সুমনের ওপর নজর রাখতে থাকে। ২০ মার্চ সন্ধ্যায় মেহেদী গ্রুপের একটি কিলার গ্রুপ সাঈদের বাসায় মিটিং করে এবং তার বাসা থেকে অস্ত্র নিয়ে গুলশান এলাকায় যায়। গুলশান এলাকায় গিয়ে সুমনকে গোপনে খুঁজতে থাকে এবং রাত সাড়ে ৯টায় তার বাহিনীর সদস্যরা সুমনকে গুলশান-১ পুলিশ প্লাজার সামনে ফজলে রাব্বি পার্কের সামনে বসা অবস্থায় দেখতে পেয়ে গুলি করে। সুমন গুলি খেয়ে দৌড়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় সন্ত্রাসীরা তাকে আরও কয়েকটি গুলি করে। লে. কর্নেল জাহিদুল করিম বলেন, সুমনের মৃত্যু নিশ্চিত করে সন্ত্রাসীরা কৌশলে পালিয়ে যায়। বড় সাঈদ ঘটনার পর গ্রেপ্তার এড়ানোর জন্য গা-ঢাকা দেন। মঙ্গলবার পটুয়াখালীর চৌরাস্তা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এই কিলিং মিশনে মামুন ওরফে বেলালসহ আরও কয়েকজন সরাসরি অংশগ্রহণ করেন। সাঈদের দেওয়া তথ্যে মামুনকে টঙ্গী থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। ঘটনার সঙ্গে জড়িত বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।