ভারতের গণমাধ্যমগুলো ভরে থাকে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনার খবরে- যেমন পাহাড়ি খাদে পড়ে যাওয়া বাস, গাড়ি চালানোর সময় মদ্যপ চালকের অন্যের গায়ে গাড়ি তুলে দেওয়া, দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ধাক্কা খাওয়া গাড়ি কিংবা বড় গাড়ির চাপায় পিষ্ট হওয়া বাইক আরোহী। প্রতিদিনের এ দুর্ঘটনাগুলো একটি নিঃশব্দ সংকটের ইঙ্গিত দেয়। ২০২৩ সালে ভারতে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ১ লাখ ৭২ হাজারের বেশি মানুষের। গড়ে দিনে ৪৭৪ জন অর্থাৎ প্রায় প্রতি তিন মিনিটে একজনের মৃত্যু হয়েছে। দেশটির কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহনমন্ত্রী নিতিন গড়কড়ি এ পরিসংখ্যান তুলে ধরেছিলেন সড়ক নিরাপত্তা- সংক্রান্ত একটি অনুষ্ঠানে। -বিবিসি
ওই বছরেই ১০ হাজার শিশু, স্কুল-কলেজের আশপাশে আরও ১০ হাজার মানুষ, ৩৫ হাজার পথচারী এবং বিপুলসংখ্যক দুই চাকার যানের চালক প্রাণ হারিয়েছেন। সবচেয়ে বড় কারণ হিসেবে উঠে এসেছে দ্রুতগতিতে গাড়ি চালানো। হেলমেট বা সিটবেল্ট না পরার জন্য যথাক্রমে ৫৪ হাজার এবং ১৬ হাজার মানুষ মারা গেছেন। ওভারলোডিং এবং লাইসেন্সবিহীন চালকও বহু দুর্ঘটনার কারণ। শুধু ভুল পথে চালানোর কারণেই বহু প্রাণহানি ঘটেছে। ২০২১ সালে দেখা যায়, ১৩ শতাংশ দুর্ঘটনার পেছনে ছিল লার্নার পারমিটধারী বা লাইসেন্সবিহীন চালক। বহু গাড়ি এত পুরোনো যে, তাতে সিটবেল্ট তো দূরের কথা এয়ারব্যাগ পর্যন্ত নেই। মূলত ভারতের বিশৃঙ্খল ট্রাফিক মিশ্রণের কারণে এ বিপজ্জনক রাস্তার পরিবেশ আরও জটিল হয়ে উঠেছে। বিবিসি বলছে, ভারতের রাস্তাগুলো নানা রকম যানবাহনে পরিপূর্ণ- গাড়ি, বাস, বাইকের সঙ্গে সঙ্গে চলে সাইকেল, রিকশা, ঠেলাগাড়ি, গরুর গাড়ি। সঙ্গে থাকে পথচারী ও অবাধে ঘুরে বেড়ানো পশু। অনেক জায়গায় হকাররা রাস্তা দখল করে নেয়, ফলে মানুষ রাস্তার মাঝে চলতে বাধ্য হয়, যা দুর্ঘটনার ঝুঁকি বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়। ভারতের কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহনমন্ত্রী গড়কড়ি বলেছেন, মানুষের মধ্যে আইন মেনে চলার অভাব এবং বেআইনি গাড়ি চালানো অনেক দুর্ঘটনার মূল কারণ। তবে এর বাইরেও রয়েছে ভুল সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং, খারাপভাবে করা রোড ডিজাইন, নিম্নমানের নির্মাণ ও দুর্বল রক্ষণাবেক্ষণ। বিবিসি