যুদ্ধবিধ্বস্ত মিয়ানমার এখন ধ্বংসস্তুপ। ৭ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্পে দেশটি এখন তছনছ। এরইমধ্যে মৃতের সংখ্যা ১৬শ’ ছাড়িয়েছে। দেশটির সামরিক সরকার জানিয়েছে, মিয়ানমারে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১,৬৪৪ জনে দাঁড়িয়েছে। আহতের সংখ্যা বেড়ে ৩ হাজার ৪০৮ জনের বেশি। এখনও ১৩৯ জন নিখোঁজ রয়েছে।
এই অবস্থায় দেশটিতে মৃতের সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়াতে পারে বলে শঙ্কা করা হচ্ছে।
মিয়ানমারের এই ভয়াবহ ভূমিকমম্পের বিধ্বংসী শক্তি ছিল ৩৩৪টি পরমাণু বোমার সমান। যুক্তরাষ্ট্রের ভূতত্ত্ববিদ জেস ফনিক্স দেশটির গণমাধ্য সিএনএনকে বলেছেন, মিয়ানমারের ভূমিকম্প যে পরিমাণ শক্তি নির্গত করেছে তা প্রায় ৩৩৪টি পরমাণু বোমার সমান।
আগামী আরও অন্তত দুই মাস মিয়ানমার ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে থাকবে বলে সতর্কবার্তাও দিয়েছেন এই ভূতত্ত্ববিদ। তিনি বলেছেন, ইন্ডিয়ান টেকটোনিক প্লেট এবং ইউরেশিয়ান টেকটোনিক প্লেটের ওপর মিয়ানমারের অবস্থান। এ দু’টি প্লেটের স্থানান্তরের কারণেই ভূমিকম্প হয়েছে। এই স্থানান্তর আরও ২ মাস পর্যন্ত চলবে। এ কারণে আগামী দু’মাস ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে থাকবে মিয়ানমার।
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) আশঙ্কা করে বলেছে, মিয়ানমারের ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়াতে পারে। ব্যাপক হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতির ইঙ্গিত দিয়ে ইউএসজিএস লাল সতর্কতা জারি করেছে।
স্থানীয় সময় বেলা ১২টা ৫০ মিনিটে মিয়ানমারের কেন্দ্রীয় অঞ্চলে ৭ দশমিক ৭ মাত্রার এই ভূমিকম্প হয়। এর কেন্দ্র ছিল ভূপৃষ্ঠের ১০ কিলোমিটার গভীরে। ভূমিকম্পের কেন্দ্র মিয়ানমারের মান্দালয় শহর থেকে প্রায় ১৭ দশমিক ২ কিলোমিটার দূরে। শক্তিশালী এই ভূমিকম্পের পর থেকে দেশটিতে কমপক্ষে ১৪টি আফটারশক আঘাত হেনেছে।
এসব আফটারশক ৭ দশমিক ৭ মাত্রার শক্তিশালী ওই ভূমিকম্প আঘাত হানার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে আঘাত হানে, যার মাত্রা ছিল ৩ থেকে ৫। সবচেয়ে শক্তিশালী ছিল ৬ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্প, যা বড় ভূমিকম্পের প্রায় ১০ মিনিট পরে আঘাত হানে।
এর মধ্যে দুটি ৪ দশমিক ৯ এবং ৬ দশমিক ৭ মাত্রার আফটারশক মিয়ানমারের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালয় থেকে প্রায় ২০ মাইল দূরে ঘটেছিল, যেখানে যথেষ্ট ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। অন্যগুলো প্রধান ভূমিকম্পের উত্তর এবং দক্ষিণে আঘাত হানে।
সূত্র: বিবিসি, আল জাজিরা, রয়টার্স
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল