বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা বলেছেন, ব্যাংক একীভূতকরণের বিষয়ে নতুন করে চিন্তা করা হবে। আপাতত এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। আগামীতে পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংকের জাহাঙ্গীর আলম সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। মুখপাত্র বলেন, আগে খেলাপি ঋণের তথ্য লুকানো হতো, এখন লুকিয়ে রাখা সব তথ্য প্রকাশের চেষ্টা চলছে। বলা হচ্ছে, খেলাপি ঋণ ৪ লাখ কোটি টাকা বা তার থেকে বেশি। পুরো তথ্য সামনে এলে প্রকৃত খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৬ লাখ কোটিও ছাড়িয়ে যেতে পারে।
হুসনে আরা শিখা বলেন, আর্থিক স্থিতিশীলতা আনতে গত পাঁচ মাসের অর্জনে খুব খুশি নয় বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে ইতোমধ্যে আর্থিক ক্ষতি কেটে গেছে। গত পাঁচ মাসে বাণিজ্যিক ব্যাংকের পর্ষদ পুনর্গঠন, ব্যাংকিং টাস্কফোর্স গঠন, ডলার বাজার স্থিতিশীল ও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণসহ অন্যান্য বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে বহু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এতে কিছু সুফল পাওয়া গেছে। কিছু ফলাফল আসতে আরও সময় লাগবে। কিন্তু আর্থিক খাতে এখনো পুরোপুরি স্থিতিশীলতা ফিরে আসেনি। তাই বাংলাদেশ ব্যাংক খুব বেশি খুশি না হলেও আর্থিক ভীতি কেটে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন হুসনে আরা শিখা।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে মুখপাত্র বলেন, ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ কোন ব্যাংকের মাধ্যমে কত টাকা কোন দেশে পাচার হয়েছে সে বিষয়ে স্পষ্টভাবে জানা যাবে। পাচারের টাকা ফেরত আনা একটি সময়সাপেক্ষ প্রক্রিয়া। নির্ধারিত সংস্থাগুলো বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে।
তিনি বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য আমরা ইতোমধ্যেই একাধিকবার নীতি সুদহার বাড়িয়েছি। আশা করছি শিগগিরই মূল্যস্ফীতি কমে আসবে। না আসলে হয়তো আবারও নীতি সুদহার বাড়ানো হতে পারে। তবে এই বিষয়টাতে ব্যবসায়ীরা মোটেই খুশি নন। কারণ ব্যাংক ঋণের জন্য তাদের অতিরিক্ত সুদ গুনতে হয়। বিনিয়োগেও ধীরগতি নেমে আসে। তাই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পাশাপাশি অন্যান্য সংস্থাগুলোকে ঠিকঠাক মতো কাজ করা প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি। কারণ বিনিয়োগ কমার জন্য শুধু সুদের হার এককভাবে দায়ী নয়। অবকাঠামগত উন্নয়ন, জ্বালানি সরবরাহ, যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ আরও অনেক কিছু বিনিয়োগ বৃদ্ধির সঙ্গে সম্পর্কিত। তাই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একক প্রচেষ্টায় মূল্যস্ফীতি পুরোপুরিভাবে কমানো সম্ভব নয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
