মাঠের মধ্যে নিঃসঙ্গ দাঁড়িয়ে আছে প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতু। দুই পাশে সংযোগ রাস্তা না থাকায় স্থানীয়দের কোনো কাজেই আসছে না সেতুটি। বর্ষা মৌসুমে চারপাশে থইথই করে পানি। সেতু থাকতেও তখন পাড়ি দিতে হয় নৌকায়। এরপর হেঁটে কাদা-পানি মাড়িয়ে উঠতে হয় সড়কে। এমন দুর্ভোগ নিয়ে বছরের পর বছর চলাচল করছে নওগাঁর মান্দার তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের কয়েক গ্রামের মানুষ। জানা যায়, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সেতুটি নির্মাণ শুরু করে নওগাঁর ইথেন এন্টারপ্রাইজ নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কয়েক দফা দর বাড়িয়ে কাজ শেষ করা হয়েছে গত জানুয়ারি মাসে। ২৪ মিটার দৈর্ঘ্যরে সেতুটি নির্মাণ করতে ব্যয় হয়েছে ৩ কোটি ৩৪ লাখ ৫২ হাজার ৭৪৬ টাকা।
স্থানীয় বাসিন্দা কামরুল আহসান জানান, তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের কয়েক গ্রামের ৬-৭ হাজার মানুষ প্রতিদিন চলাচল করে এ রাস্তা দিয়ে। দুর্ভোগ সঙ্গী করে যেতে হয় উত্তরাঞ্চলের সবচেয়ে বড় চৌবাড়িয়া হাটে। এ ছাড়া নওগাঁর নিয়ামতপুর ও রাজশাহীর তানোর উপজেলার সঙ্গে কম সময়ে ও সহজে যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম বিলের ভিতরের এ রাস্তা। মান্দা উপজেলা এলজিইডি রাস্তা ছাড়াই খামখেয়ালিভাবে বিলের মাঝখানে সেতুটি নির্মাণ করে। সড়ক না থাকায় অব্যবহৃত পড়ে আছে সেতুটি। শংকরপুর দক্ষিণপাড়ার ফজলুল করিম বলেন, চারদিকে ফসলের মাঠ। ঠিক মাঠের মাঝখানে সেতু। নেই সংযোগ সড়ক। বিলের ভিতর দিয়ে ভাঙা রাস্তায় কেউ হেঁটে বা বাইসাইকেলে, কেউ মোটরসাইকেল নিয়ে চলাচল করেন। অনেকে যাতায়াত করেন চার্জারভ্যানেও। এমন অসহায় অবস্থা আমাদের। একই গ্রামের হাসেম আলী প্রামাণিক বলেন, সেতুর সংযোগ সড়ক না থাকায় বিলের ভিতর দিয়ে অনেক কষ্টে যাতায়াত করতে হয়। বর্ষার সময় জনপ্রতি ৫০ টাকা ভাড়ায় চলাচল করতে হয় নৌকায়। খরা ও বর্ষা দুই মৌসুমেই আমাদের পোহাতে হয় চরম দুর্ভোগ। তেঁতুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মোকলেছুর রহমান বলেন, সেতুর দুই পাশে সংযোগ রাস্তা করার প্রয়োজন ছিল সেটা এখনো হয়নি। আমি বিষয়টি এলজিইডি কর্তৃপক্ষে জানিয়েছি। মান্দা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী আবু সায়েদ বলেন, খুব শিগগিরই সেতুর দুই পাশের সংযোগ রাস্তার জন্য মাটি ফেলা হবে।