নগর-মহানগর, জেলা-উপজেলা, প্রত্যন্ত গ্রাম, পাহাড়-সমতল দেশের সব জায়গায় জমে উঠেছে কোরবানির পশুর হাট। রাজধানীর বাজারগুলোতে পর্যাপ্ত পশুর জোগান রয়েছে। একাধিক ক্রেতার সঙ্গে কথা বললে তারা দাম সহনীয় রয়েছে বলে জানিয়েছেন। বগুড়ায় হাটগুলোতে গরুর আমদানি বেড়েছে। চাহিদা বেশি ছোট গরুর। চট্টগ্রামে হাটগুলোতে পর্যাপ্ত সংখ্যক পশু আসছে। ক্রেতাও আছে। তবে এখনো বিক্রি কম বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। খাগড়াছড়িতে পশুর হাট বসে সপ্তাহে দুই দিন। বিভিন্ন উপজেলা থেকে গরু নিয়ে আসেন বিক্রেতারা। সমতলের ব্যাপারীরা আসায় জমে ওঠে পাহাড়ের হাট। বৈরী আবহাওয়ায়ও পছন্দের গরু কিনতে ব্যস্ত ক্রেতারা। নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-
ঢাকা : পবিত্র ঈদুল আজহার বাকি আর মাত্র দুই দিন। রাজধানী ঢাকার বাজারগুলোতে পর্যাপ্ত পশুর জোগান রয়েছে। চাহিদার চেয়ে প্রায় ২০ লাখ বেশি। দাম সহনীয় বলে দাবি ক্রেতাদের। বিভিন্ন বাজার ঘুরে ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পর্যাপ্ত পশুর জোগান থাকায় দাম বাড়েনি। আজ থেকে বাজার পুরোদমে জমে উঠবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। রাজধানীর কমলাপুর পশুর হাটে গতকাল দুপুরে গিয়ে দেখা যায়, বিক্রির জন্য সারি সারি পশু প্রস্তুত করে রেখেছেন বিক্রেতারা। ক্রেতারা পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঘুরছেন। বেশির ভাগ ক্রেতার পছন্দ মাঝারি আকারের পশু। শাহজাদপুর বাজারে বগুড়া থেকে ২৮টি পশু নিয়ে আসা সাদিক মুবিন বলেন, দুই ট্রাক পশু নিয়ে এসেছি। এখন পর্যন্ত একটা বড় ও তিনটা মাঝারি আকারের পশু বিক্রি করতে পেরেছি। আজ থেকে পশু বিক্রি জমে উঠবে।
বগুড়া : বগুড়ার মহাস্থানে সপ্তাহে দুই দিন গরুর হাট বসে। এখানে উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন স্থান থেকে গরু-ছাগল নিয়ে আসেন বিক্রেতারা। জেলার এই হাটে গরুর আমদানি বেশি। শহরের লোকজন এই হাট থেকে বেশি পশু কিনে থাকেন। শহরের কাছাকাছি এবং গাড়ি ভাড়া কম হওয়ায় অনেক ক্রেতাই এই হাটে ভিড় করেন। দুপচাঁচিয়া ধাপের হাট, গাবতলীর নাড়ুয়ামালা ও পেরীহাট, দুবলাগাড়ি হাটসহ অন্যান্য পশুর হাটগুলোতে প্রচুর গরু-ছাগল উঠছে। হাটগুলোতে ৫০ হাজার থেকে শুরু করে ৪ থেকে ৫ লাখ টাকা মূল্যের গরু দেখা গেছে।
চট্টগ্রাম : চট্টগ্রামের সাগরিকা ও বিবির হাট। এ দুই হাটে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে গরু আসে। গতকাল এ দুটি বাজারে দেশি জাতের ছোট-বড়-মাঝারি- সব ধরনের গরু দেখা যায়।
খাগড়াছড়ি : খাগড়াছড়িতে কোরবানি পশুর হাট জমে উঠেছে। তবে পাহাড়ের ক্রেতার পাশাপাশি সমতল জেলার ক্রেতারা এখান থেকে গরু নিচ্ছেন প্রচুর। খাগড়াছড়িতে পশুর হাটবাজার সপ্তাহে দুই দিন। এ বাজারে বিভিন্ন উপজেলা থেকে গরু বিক্রেতাদের সমাগম ঘটে। এ ছাড়াও সমতলের বিভিন্ন জেলা থেকে ব্যাপারিরা এ বাজারে আসায় কোরবানির পশুর হাট জমে ওঠে।
খাগড়াছড়ি প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সুপর্ণা দে বলেন, কোরবানি কেন্দ্র করে খাগড়াছড়িতে অস্থায়ীভাবে ২৬টি হাট বসেছে। এসব হাটে ভেটেরিনারি ১৮টি টিম কাজ করছে। খাগড়াছড়িতে পশুর খামারি ২ হাজার ৫৫৮। গরুর সংখ্যা ১৯ হাজার ১১০টি। চাহিদা ১৮ হাজার। পাহাড়ের চাহিদা মিটিয়ে কোরবানির পশু চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, নোয়াখালীসহ বিভিন্ন জেলার চাহিদা পূরণে ভূমিকা রাখবে। পাহাড়ি গরুগুলো প্রাকৃতিক উপায়ে পালিত হয়। মোটাতাজাকরণ ওষুধ খাওয়ানো হয় না। স্বাস্থ্যসম্মত। জেলা পুলিশ সুপার মো. আরেফিন জুয়েল জানান, ক্রেতা-বিক্রেতা যেন প্রতারণার শিকার না হন, সেজন্য আমাদের পুলিশ প্রশাসনের টিম কাজ করছে।