সোমবার (স্থানীয় সময় রাত ১২:০১) থেকে ১২টি দেশের নাগরিকদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি হচ্ছে। এই নির্দেশ জারি করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি জানিয়েছেন, বিদেশি সন্ত্রাসীদের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতেই এই সিদ্ধান্ত।
যে ১২টি দেশের ওপর সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে সেগুলো হলো: আফগানিস্তান, মিয়ানমার, চাদ, কঙ্গো প্রজাতন্ত্র, ইকুয়েটোরিয়াল গিনি, ইরিত্রিয়া, হাইতি, ইরান, লিবিয়া, সোমালিয়া, সুদান ও ইয়েমেন। এছাড়া বুরুন্ডি, কিউবা, লাওস, সিয়েরা লিওন, টোগো, তুর্কমেনিস্তান ও ভেনেজুয়েলা থেকে আসা নাগরিকদের প্রবেশে আংশিক বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।
ট্রাম্প বলেন, ‘সন্ত্রাসের আশ্রয়দাতা’ দেশগুলোকেই টার্গেট করেছি। তিনি আরও বলেন, যেসব দেশ সন্ত্রাসীদের আশ্রয় দেয়, পর্যাপ্ত পরিচয় যাচাই করতে পারে না, ভিসা জালিয়াতি ঠেকাতে ব্যর্থ, এবং যুক্তরাষ্ট্রে এসে যারা নিয়ম ভাঙে—তাদের ওপরই এই কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তিনি উদাহরণ হিসেবে বোল্ডার, কলোরাডোর একটি ঘটনার কথা বলেন, যেখানে একজন মিশরীয় নাগরিক ইসরায়েলপন্থী এক জমায়েতে পেট্রোল বোমা ছোড়েন। যদিও মিশরের ওপর কোনো নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়নি।
নিষেধাজ্ঞায় ক্ষুব্ধ দেশগুলো, পাল্টা ব্যবস্থা নেয়ার ঘোষণা
নিষেধাজ্ঞা পাওয়া দেশের নেতারা ও সাধারণ মানুষ এর বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। চাদের প্রেসিডেন্ট মাহামাত ইদ্রিস দেবি বলেন, চাদের বিলাসবহুল বিমান বা বিলিয়ন ডলার নেই, কিন্তু দেশের মর্যাদা আছে। আমরাও যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের আর ভিসা দেব না।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রে পুনর্বাসনের অপেক্ষায় থাকা আফগান নাগরিকরা দুশ্চিন্তায় পড়ে গেছেন। তারা বলছেন, যদি তাদের ফিরতে হয়, তবে তালেবানের হাতে নির্যাতনের শিকার হতে পারেন।
বিরোধীদের কটাক্ষ: ‘অমানবিক ও অসাংবিধানিক সিদ্ধান্ত’
ডেমোক্র্যাট দলের আইনপ্রণেতারা এই সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেছেন। কংগ্রেসম্যান রো খানা বলেন, ট্রাম্পের এই নিষেধাজ্ঞা অমানবিক ও সংবিধানবিরোধী। মানুষ আশ্রয় চাইবার অধিকার রাখে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ট্রাম্প প্রশাসনের এটি একটি নির্বাচনী কৌশল, যার মাধ্যমে অভিবাসন কঠোর করার পূর্বের নীতিগুলো আবার চালু করা হচ্ছে। উল্লেখ্য, ট্রাম্পের আগের মেয়াদেও একইভাবে কয়েকটি মুসলিমপ্রধান দেশের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল