বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) চেয়ারম্যান রেহমান সোবহান বলেছেন, বাংলাদেশকে রপ্তানির বিকল্প বাজার খুঁজে বের করতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন শুল্কনীতির কারণে বৈশ্বিক বাণিজ্যে যে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে, তা থেকে উত্তরণের জন্য তিনি এই পরামর্শ দিয়েছেন। গতকাল ট্রাম্পের পাল্টা শুল্কে বাংলাদেশে প্রভাব ও প্রতিক্রিয়া নিয়ে আয়োজিত সংলাপে তিনি এসব কথা বলেন। রাজধানীর হোটেল লেকশোরে এই সংলাপের আয়োজন করে সিপিডি। সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুনের সঞ্চালনায় সংলাপে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান। এ সময় বক্তব্য দেন এইচএসবিসি বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান, বিকেএমইএর সাবেক সভাপতি ফজলুল হক, ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি শামস মাহমুদ, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের সদস্য মোস্তফা আবিদ খান ও বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতির সভাপতি তাসলিমা আখতার লিমা।
রেহমান সোবহান বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের রপ্তানির সবচেয়ে বড় বাজার। কিন্তু বর্তমানে সেখানে অনিশ্চয়তা এতটাই গভীর যে, এখনই আমাদের ইউরোপীয় ইউনিয়ন, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, জাপান এবং এশিয়ার উদীয়মান বাজারে রপ্তানি বাড়ানোর কৌশল নিতে হবে। বিশ্ব অর্থনীতিতে আগামী ২৫ বছরে এশিয়া হবে সবচেয়ে বড় প্রবৃদ্ধির কেন্দ্র। এই অঞ্চলকে গুরুত্ব না দিলে পিছিয়ে পড়তে হবে। তিনি আরও বলেন, ট্রাম্পের শুল্ক নীতির প্রধান লক্ষ্যবস্তু চীন। তাদের মধ্যকার সম্পর্ক কেমন হবে, তা এখনো নির্ধারিত হয়নি। আরও সময় লাগবে। বিশ্ব অর্থনীতিতে সেটাই হবে সবচেয়ে বড় বিষয়। এই পরিস্থিতিতে নিজেদের যে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা আছে, তার মধ্যে থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নে আমাদের বাজার বড় করার চেষ্টা করতে হবে। কেননা সেখানে আরও কয়েক বছর বাংলাদেশের জন্য শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধা আছে। বাংলাদেশ ট্যারিফ অ্যান্ড ট্রেড কমিশনের সাবেক সদস্য মোস্তফা আবিদ খান বলেন, ‘এটি পারস্পরিক শুল্ক নয়। যুক্তরাষ্ট্র কী চায়, তা বুঝে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) করা সহজ নয়। আগে বারবার তারা বলেছে, বাংলাদেশ এখনো প্রস্তুত নয়।’
তাসলিমা আখতার লিমা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ট্যারিফ দুষ্টচক্রের প্রভাব ফেলবে বাণিজ্যে। যার সরাসরি প্রভাব পড়বে শ্রমিকদের উপরে। এমনিতেই বর্তমান পরিস্থিতিতে শ্রমিকের মজুরি, জীবনযাত্রার ব্যয় ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে ভীষণ উদ্বেগের মধ্যে আছি।