মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করলে সম্ভবত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সঙ্গে সম্পৃক্ত কোনো একটা মহল তা ফাঁস করে দিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। গতকাল দুপুরে ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
একজন সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, ট্রাইব্যুনালে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হওয়ার পরপরই ফাঁস হয়ে যাচ্ছে। যে কারণে ২২ জন পুলিশ কর্মকর্তা গা ঢাকা দিয়েছেন। কোন জায়গা থেকে ফাঁস হচ্ছে, চিহ্নিত করতে পেরেছেন কি না, জানতে চাইলে তাজুল ইসলাম বলেন, এটা দুর্ভাগ্যজনক যে, এখানে কোনো না কোনো জায়গা থেকে এটা ফাঁস হচ্ছে।
এটা আমরা খুব উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছি যে, সম্ভবত এই ট্রাইব্যুনালের সঙ্গে সম্পৃক্ত কোনো একটা মহল এর সঙ্গে জড়িত বা প্রসিকিউশনের মধ্যে, অফিসেও থাকতে পারে। আমরা বিষয়টাকে গভীরভাবে উদ্বেগের সঙ্গে বিশ্লেষণ করছি এবং তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করছি।
তিনি বলেন, যদি আমরা প্রমাণ পাই যে, প্রসিকিউশন অফিসের কেউ, প্রসিকিউশন টিমের সদস্য কেউ, অথবা ট্রাইব্যুনালের কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী; যারাই হোক, যারা এ ধরনের তথ্য ফাঁসের সঙ্গে জড়িত হবে, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির মুখোমুখি করা হবে। তিনি আরও বলেন, আমরা এটা খুব সিরিয়াসলি নিয়েছি এবং উদ্বেগের সঙ্গেই এটা নিয়েছি। এটাকে নিশ্চিদ্র করার জন্য প্রয়োজনীয় তদন্তকাজ চালাচ্ছি। আমরা এটার জন্য দায়ী যাকে পাব, তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করব। ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালের কমান্ড রেসপনসিবিলিটির মামলায় সবচেয়ে বেশি ডকুমেন্ট জড়িত বলেও উল্লেখ করেন তাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, সেটারও চূড়ান্ত পর্যায়ের কাজ চলছে। আশা করছি, ঈদের পর সেটাও চলে আসবে। কারণ, শেখ হাসিনার কমান্ড রেসপনসিবিলিটি প্রমাণ করার জন্য সব মামলার সারসংক্ষেপ এখানে চলে আসবে। এটা অনেক বড় মামলা। সে জন্য একটু বেশি সময় লাগছে। আশা করছি, ঈদের পরপর এটাও চলে আসবে। গণ অভ্যুত্থানের সময় সাভারের আশুলিয়ায় ছয়জনের লাশ পোড়ানোর মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের সময় বাড়িয়ে আগামী ২৮ এপ্রিল নির্ধারণ করেছেন ট্রাইব্যুনাল। আজ (গতকাল) এই সময় বাড়ানো হয়। চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, এই মামলার তদন্ত প্রতিবেদনের খসড়া ইতোমধ্যে আমাদের হাতে চলে এসেছে। হয়তো কয়েক দিন সময় লাগবে মাত্র। আদালত ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত সময় দিয়েছেন। কিন্তু তদন্ত প্রতিবেদন প্রস্তুত হয়ে গেছে। ঈদের পর আনুষ্ঠানিকভাবে দাখিল করা হবে। অনানুষ্ঠানিকভাবে আমাদের হাতে চলে এসেছে। সে কারণে ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত সময় দিয়েছেন। আমরা আশা করছি, এই মামলার আনুষ্ঠানিক অভিযোগের মধ্য দিয়েই হয়তো আনুষ্ঠানিক বিচারকাজটা শুরু করা যাবে।