চিকিৎসা বিজ্ঞানের তথ্যমতে, বাংলাদেশে ক্যান্সারসহ নানা জটিল রোগে আক্রান্ত রোগীদের বড় একটি অংশ পেশায় কৃষক। এর মূল কারণ হিসেবে উঠে এসেছে কৃষিকাজে যথাযথ নিয়ম না মেনে কীটনাশক ও রাসায়নিক সার ব্যবহার। এতে শুধু কৃষকরাই নয়, বরং সমগ্র জনগোষ্ঠী নানাবিধ স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছে এবং পরিবেশের ভারসাম্যও বিনষ্ট হচ্ছে। এ প্রেক্ষাপটে পরিবেশবান্ধব কৃষি উৎপাদন এখন সময়ের দাবিতে পরিণত হয়েছে।
এই বাস্তবতা তুলে ধরে কুমিল্লায় ‘বাংলাদেশে অধিক বিপজ্জনক বালাইনাশক এবং রাসায়নিকের উন্নত ব্যবস্থাপনার জন্য সক্ষমতা’ বিষয়ক একটি দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ গতকাল শনিবার অনুষ্ঠিত হয়। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই) কুমিল্লা অঞ্চল, কুমিল্লা জেলা ও হর্টিকালচার সেন্টার, কুমিল্লার যৌথ আয়োজনে তিনটি সেশনে বিভক্ত এ প্রশিক্ষণে অংশ নেন উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা ও উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা।
প্রশিক্ষণের উদ্বোধনী বক্তব্যে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, কুমিল্লা অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ মো. আজিজুর রহমান। তিনি বলেন, কৃষিতে কীটনাশকের নিরাপদ ব্যবহার এবং জৈব চাষাবাদ সামাজিক আন্দোলনে রূপ নিতে হবে। এতে কৃষক ও ভোক্তা উভয়ের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত হবে।
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার কারিগরি সহায়তায়, গ্লোবাল এনভায়রনমেন্ট ফ্যাসিলিটির অর্থায়নে এবং বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ব বিভাগের বাস্তবায়নে এই প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালিত হয়।
প্রশিক্ষণে কৃষকদের যত্রতত্র কীটনাশক প্রয়োগ, নির্দিষ্ট সময়ের আগে ফসল সংগ্রহ, অতিমাত্রায় রাসায়নিক সার ব্যবহার এবং জৈব সারের ব্যবহার না করার নেতিবাচক প্রভাব সম্পর্কে সচেতন করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
প্রশিক্ষণের সভাপতিত্ব করেন ডিএই কুমিল্লা জেলার উপপরিচালক কৃষিবিদ মো. আইউব মাহমুদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন ডিএই কুমিল্লা অঞ্চলের সংস্থাপন ও উন্নয়ন শাখার উপপরিচালক কৃষিবিদ শাহনাজ রহমান। দিনব্যাপী প্রশিক্ষণে মূল আলোচক ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ব বিভাগের প্রফেসর ড. গোপাল দাস, প্রফেসর ড. মো. রমিজ উদ্দিন এবং প্রফেসর ড. মো. মাহবুবুর রহমান।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ডিএই কুমিল্লার অতিরিক্ত উপপরিচালক (শস্য উৎপাদন) কৃষিবিদ শেখ আজিজুর রহমান। প্রশিক্ষণটি ভবিষ্যৎ কৃষিনিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
বিডি প্রতিদিন/নাজিম