রাখাইন সম্প্রদায়ের অন্যতম প্রধান উৎসব বর্ষবরণ (সাংগ্রেইং-১৩৮৭) ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে। কক্সবাজার শহরের টেকপাড়া, গোলদিঘীর পাড়সহ রাখাইন পল্লীগুলোতে তিনদিনব্যাপী এ উৎসবে পানিতে একে অপরকে ভিজিয়ে দেওয়া ছাড়াও ছিল ধর্মীয় আচার, প্রার্থনা এবং সাংস্কৃতিক পরিবেশনা।
নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে রাখাইনরা শুদ্ধতার প্রতীক হিসেবে জল ছিটিয়ে পুরোনো গ্লানি দূর করেন। উৎসবের প্রথম দিনে বৃহস্পতিবার বৌদ্ধ মন্দিরে পূজা-অর্চনার মধ্য দিয়ে শুরু হয় কর্মসূচি। দ্বিতীয় ও শেষ দিনে আয়োজন করা হয় বর্ণিল শোভাযাত্রা ও ঐতিহ্যবাহী নৃত্য-গীতের। বিশ্বাস করা হয়, এই জলে আছে পবিত্রতা, আছে পুরোনো গ্লানি ধুয়ে ফেলার শক্তি। তাই তো এখানে শুধু জল নয়, ছিটানো হয় ভালোবাসা, বন্ধুত্ব আর শুভকামনা।
রাখাইন বুদ্ধিস্ট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের প্রাক্তন কেন্দ্রীয় সভাপতি ও কক্সবাজার সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের পরিচালক মং চেং হ্লা বলেন, গত বছর কক্সবাজার শহর, টেকনাফ, উখিয়া, মহেশখালী, রামু, চৌফলদণ্ডি ও চকরিয়ায় ৩৬টি মণ্ডপে (প্যান্ডেল) সাংগ্রেইং উৎসব হয়েছিল। এবার ৪০টি মণ্ডপে জল উৎসব হয়েছে।
উৎসবকে ঘিরে প্রশাসনের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। স্থানীয়দের পাশাপাশি পর্যটকরাও অংশগ্রহণ করেছে এই উৎসবে। রাখাইনদের বর্ষবরণ শুধু একটি ধর্মীয় বা জাতিগত উৎসব নয়, এটি সম্প্রীতির মিলনমেলাও বটে।
এদিকে অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় দিনে শুক্রবার সন্ধ্যায় শহরের আছিমং পাড়া জলখেলি প্যান্ডেলে জেলাপ্রশাসক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা বিষয়ক হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. খলিলুর রহমান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, বাংলাদেশ একটি অসাম্প্রদায়িক নৃগোষ্ঠীর দেশ। এ সময়টি বাংলাদেশের উৎসবের সময়। আশা করি, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখে সকলে মিলে সুন্দর ও সম্ভাবনার একটি দেশ গড়ে তুলতে পারব। ড. খলিলুর রহমান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হওয়ায় রাখাইনদের পক্ষ থেকে তাকে ধন্যবাদ জানানো হয়। পরে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জলকেলি উৎসবের বিভিন্ন প্যান্ডেলের আয়োজকদের চেক বিতরণ করা হয়।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল