প্রায় দুইশ বছরের ঐতিহ্য নিয়ে এবারেও চৈত্র সংক্রান্তি তিথীতে পূজা অর্চনার মধ্যে দিয়ে চরক পূজা ও মেলা অগনিতক ভক্তদের মিলনমেলায় পরিণত হয়। দিনাজপুরের বিভিন্ন এলাকায় এই চরক পূজা ও একদিনের মেলা অনুষ্ঠিত হয়।
শনিবার সন্ধ্যার দিকে চারদিকে হাজারো মানুষের ভিড়। সবার দৃষ্টি ৩০ ফুট উচ্চতার একটি কাঠের দণ্ডের দিকে। সেখানে আড়াআড়ি করে বাঁশ বেঁধে তাতে ঝোলানো লোহার বড় দুটি বড়শি। সেই বড়শি পিঠের চামড়ায় গেঁথে শূন্যে ঘুরছিলেন অরবিন্দ চন্দ্র রায় (৪২)। পাশাপাশি তিনি ফুল-পানি, আবির, কলা, বাতাসা, নকুলদানা ইত্যাদি ছিটিয়ে দিচ্ছেন ভক্ত-দর্শকের দিকে। দর্শনার্থীরা ব্যস্ত হয়ে পড়েন তা সংগ্রহ করার জন্য। এসময় চলছিল উলুধ্বনি, শঙ্খধ্বনি। বাজছিল ঢাকঢোল।
শনিবার সন্ধ্যার দিকে দিনাজপুরের ফুলবাড়ী পৌর এলাকার চাঁদপাড়া শ্মশান কালীমন্দির প্রাঙ্গণে দেখা গেল এই দৃশ্য। হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব চড়ক পূজা উপলক্ষে প্রতিবছর চৈত্র মাসের শেষ দিকে পিঠে বড়শি গেঁথে চড়কে ঘোরার উৎসব হয়। যা দেখতে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষ সমবেত হয়। চড়ক পূজাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন মন্দিরে কয়েকদিন ধরে হরগৌরী নৃত্য, অসিনৃত্য, শিবের গাজন করা হয়।
উৎসবের আয়োজন করা চাঁদপাড়া মন্দির কমিটির সভাপতি সুরজিত চন্দ্র রায় বলেন, চৈত্র মাসের শেষে চড়ক কালীপূজা বা নীল পূজার আয়োজন করা হয়। শতবছরের পুরোনো এই পূজা পূর্বপুরুষদের আমল থেকে হয়ে আসছে। পূজা ও চড়ক উৎসবকে কেন্দ্র করে দিনব্যাপী মেলা বসেছে। এতে কয়েকে হাজার ভক্ত ও দর্শনার্থীর সমাগম ঘটে।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন