সিলেটের কানাইঘাট উপজেলায় দেখা মিলল বিরল প্রজাতির এক প্রাণীর। শনিবার লোভাছড়া নদীর পাড়ে অপরিচিত দেখতে এ প্রাণীটির দেখা পান গ্রামবাসী। পরে তারা ধাওয়া দিয়ে প্রাণীটিকে ধরে ফেলেন। খবর পেয়ে বন বিভাগের কর্মকর্তারা এসে গ্রামবাসীর সহায়তায় প্রাণীটিকে লোভছড়া বনে অবমুক্ত করেন।
তবে প্রাণীটির নাম নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। বন বিভাগের কর্মকর্তা ও পরিবেশকর্মীরা বলছেন, এটি বিলুপ্তপ্রায় বনছাগল বা বিরল প্রজাতির হরিণ হতে পারে। অপরদিকে প্রাণী বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি 'লাল গোরাল'।
স্থানীয়রা জানান, গতকাল শনিবার সকালে নদীতে পানি পান করতে নামে প্রাণীটি। কয়েকজন দেখতে পেয়ে প্রাণীটি ধরার জন্য ধাওয়া দেন। কিছুটা দূরে আসামপাড়া নিহালপুর গ্রামের পাশে তারা প্রাণীটি ধরে ফেলেন। এরপর লোভাছড়া চা বাগানের তত্ত্বাবধায়ক ও প্রাণী অধিকারকর্মী ইউসুফ উসমানকে খবর দেওয়া হয়। তিনি বন বিভাগের কর্মকর্তাদের খবর দেন। পরে বন বিভাগের বিট কর্মকর্তা মো. আলী আক্তারুল হক চৌধুরীর নেতৃত্বে একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রাণীটি উদ্ধার করে লোভাছড়া বাগান সংলগ্ন বনে অবমুক্ত করেন।
ইউসুফ ওসমান জানান, প্রাণীটি পানি খেতে নদীতে নামলে স্থানীয় লোকজন ধাওয়া দিয়ে ধরেন। পরে বন বিভাগের কর্মকর্তারা চেতনানাশক ইনজেকশন দিয়ে একে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে নিয়ে এসে লোভাছড়া বনে অবমুক্ত করেন।
বন বিভাগের বিট কর্মকর্তা মো. আলী আক্তারুল হক চৌধুরী বলেন, প্রাণিটি বিলুপ্ত প্রজাতির হরিণ। তিনি বলেন, প্রাণীটি ঊরুতে কিছুটা আঘাত পেয়েছিল, এ জন্য চিকিৎসা দেওয়া হয়। সুস্থ অবস্থাতেই প্রাণীটিকে লোভাছড়া চা বাগানসংলগ্ন বনে অবমুক্ত করা হয়েছে।
এদিকে পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আবদুল করিম কিম জানিয়েছেন, উদ্ধারকৃত প্রাণীটি বনছাগল। তিনি বলেন, কয়েক দশক আগেও সিলেটের বনে প্রচুর পরিমাণে বনছাগলের দেখা মিলত। এখন আর চোখেই পড়ে না। সিলেট অঞ্চলে প্রাণীটি এখন একেবারেই বিলুপ্তপ্রায়।
এদিকে, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি, অ্যানিমেল অ্যান্ড বায়ো মেডিকেল সায়েন্সের অধ্যাপক ড. মো. মুক্তার হোসাইন প্রাণীটিকে লাল গোরাল বলে শনাক্ত করেন। তিনি বলেন, 'এটি হরিণ প্রজাতির হলেও হরিণ নয়। এটি রেড গোরাল। রেড ফক্স নামেও এটি পরিচিত।'
বিডি-প্রতিদিন/শআ