যুক্তরাষ্ট্রে ওষুধের মূল্য কমাতে ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনায় বসেছে ফাইজারসহ বেশ কয়েকটি ওষুধ কোম্পানি। তবে এখনো কোনো কোম্পানি সরাসরি মূল্য কমানোর প্রতিশ্রুতি দেয়নি। ফাইজারের প্রধান নির্বাহী আলবার্ট বোরলা এই তথ্য জানিয়েছেন ।
গত মাসে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একটি নির্বাহী আদেশ জারি করে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে ওষুধের দাম যেন অন্যান্য উন্নত দেশের তুলনায় বেশি না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে। তিনি নির্দেশ দেন, ৩০ দিনের মধ্যে ওষুধের জন্য ‘মোস্ট ফেভার্ড নেশন’ (সবচেয়ে সুবিধাপ্রাপ্ত দেশের) মূল্যের ভিত্তিতে নতুন দাম নির্ধারণ করতে হবে।
এই নির্দেশনা অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য ও মানবসেবা বিভাগ (HHS) আশা করছে, দেশটির ওষুধ কোম্পানিগুলো এমন দাম নির্ধারণ করবে, যা অন্যান্য ধনী দেশে সবচেয়ে কম দামে বিক্রি হওয়া ওষুধের সমান হবে।
এই প্রসঙ্গে আলবার্ট বোরলা গোল্ডম্যান স্যাকস হেলথকেয়ার সম্মেলনে অংশ নিয়ে বলেন, আমরা জানি না ৩০ দিনের মধ্যে কী সিদ্ধান্ত আসবে। তবে আলোচনাগুলো হয়েছে সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে। যদিও সেগুলো অনেকটাই নীতিগত পর্যায়ে আটকে ছিল, বিশদ বিশ্লেষণে যাওয়া হয়নি।
বোরলা আরও বলেন, ইউরোপে যুক্তরাষ্ট্রের চাপের ফলে যদি দাম বাড়ানো সম্ভব হয়, তবে সেখানকার দাম কিছুটা বাড়তে পারে। তবে তিনি ইঙ্গিত দেন, যদি যুক্তরাষ্ট্রে ওষুধের দাম বাধ্যতামূলকভাবে কমিয়ে দেওয়া হয়, তাহলে ফাইজার কিছু দেশে তাদের ওষুধ সরকার-প্রদত্ত মূল্যছাড়ের তালিকা থেকে সরিয়ে নিতে পারে।
তবে তিনি স্পষ্ট করে বলেন, আমরা ওই দেশগুলোর বাজার থেকে আমাদের পণ্য সরিয়ে নেব না, বরং সেগুলোকে উন্মুক্ত বাজারে রাখব, যাতে সেগুলো সরকারি ছাড় ছাড়া বিক্রি হয়।
এই মুহূর্তে স্পষ্ট নয় যে, যুক্তরাষ্ট্র সরকার কীভাবে এই মূল্যনির্ধারণ নীতি বাস্তবায়ন করবে। বিশ্লেষক ও আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরনের নীতি বাস্তবায়ন কঠিন হতে পারে।
এইচএইচএ-এর এক মুখপাত্র এক ইমেইল বার্তায় বলেন, আমরা ওষুধ কোম্পানিগুলোর কাছে দাবি জানিয়েছি—তারা যেন দামের বিষয়ে গোপনীয়তা না রেখে স্বচ্ছতা বজায় রেখে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের জন্যও ন্যায্য দাম নির্ধারণ করে, যেভাবে তারা অন্যান্য দেশে করে।
স্বাস্থ্য সচিব রবার্ট এফ. কেনেডি জুনিয়রের অধীনে একটি নতুন পদ্ধতি চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে, যার মাধ্যমে আমেরিকান রোগীরা সরাসরি ওষুধ প্রস্তুতকারকদের কাছ থেকে ‘মোস্ট-ফেভার্ড-নেশন’ মূল্যে ওষুধ কিনতে পারবেন।
এই আলোচনার ভবিষ্যৎ কী হবে, তা এখনও অনিশ্চিত। তবে ফাইজারের বক্তব্যে বোঝা যাচ্ছে, ওষুধের মূল্য নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে নীতিগত ও অর্থনৈতিক এক টানাপড়েন শুরু হয়েছে, যার প্রভাব শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই নয়, ছড়িয়ে পড়তে পারে বিশ্বের অন্যান্য দেশেও।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল