মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই সরকারি খাতে ব্যয়সংকোচন নীতি চালু করেছেন। এর অংশ হিসেবে "সরকারি দক্ষতা বিভাগ" নামে নতুন একটি বিভাগ চালু করা হয়েছে, যার দায়িত্ব পেয়েছেন ধনকুবের ইলন মাস্ক। দায়িত্ব গ্রহণের পর তিনি হাজার হাজার ফেডারেল কর্মী ছাঁটাইয়ের উদ্যোগ নিয়েছেন, যার মধ্যে গবেষক ও বিজ্ঞানীরাও রয়েছেন।
এমন পরিস্থিতিতে মার্কিন গবেষকদের জন্য নতুন সুযোগ তৈরি করতে চায় ফ্রান্স। দেশটির উচ্চশিক্ষা ও গবেষণাবিষয়ক মন্ত্রী ফিলিপ ব্যাপটিস্ট ইতিমধ্যেই ফরাসি গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোকে একটি চিঠি দিয়েছেন। চিঠিতে তিনি লিখেছেন, "অনেক নামকরা গবেষক যুক্তরাষ্ট্রে নিজেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন। আমরা তাদের মধ্যে নির্দিষ্টসংখ্যক ব্যক্তিকে স্বাগত জানাতে চাই।"
জলবায়ু ও স্বাস্থ্য গবেষকদের অগ্রাধিকার
ফরাসি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ফিলিপ ব্যাপটিস্ট বলেন, "বৈজ্ঞানিক গবেষণা ও প্রযুক্তি খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের আমরা বিশেষ অগ্রাধিকার দিতে চাই।"
এদিকে, ফ্রান্সের অ্যাক্স-মার্সেই ইউনিভার্সিটি ইতোমধ্যে ঘোষণা দিয়েছে যে, তারা বিশেষ করে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে কাজ করা মার্কিন গবেষকদের স্বাগত জানাবে।
যুক্তরাষ্ট্রে গবেষণা সংকট ও বিজ্ঞানীদের প্রতিবাদ
ট্রাম্প প্রশাসন ইতোমধ্যেই জীবন রক্ষাকারী গবেষণা খাতে তহবিল কমিয়ে দিয়েছে। স্বাস্থ্য ও জলবায়ু সংক্রান্ত গবেষণার সঙ্গে যুক্ত শত শত কর্মীকে ছাঁটাইয়ের পরিকল্পনা করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, প্রশাসন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) ও প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নিয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে, গত শুক্রবার নিউইয়র্ক, ওয়াশিংটন, বোস্টন, শিকাগো, ম্যাডিসন ও উইসকনসিনসহ বেশ কয়েকটি শহরে বিজ্ঞানী ও গবেষকরা বিক্ষোভ করেছেন। তাঁদের সঙ্গে চিকিৎসক, প্রকৌশলী ও শিক্ষার্থীরাও যোগ দেন।
ওয়াশিংটনের এক বিক্ষোভে অংশ নেওয়া ম্যাসাচুসেটস জেনারেল হাসপাতালের গবেষক জেসি হেটনার বলেন, "বিজ্ঞান ও গবেষণার ওপর ভর করেই আজকের আমেরিকা দাঁড়িয়ে আছে। এটিকে অবহেলা করা যাবে না।"
ফ্রান্সের উদ্যোগ নিয়ে ইতিমধ্যেই গবেষণা খাতের বিশেষজ্ঞরা আলোচনা শুরু করেছেন। ফরাসি সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা শুধু মার্কিন গবেষকদের স্বাগত জানাতেই নয়, বিশ্বজুড়ে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অগ্রগতিতে অবদান রাখতেই এই সিদ্ধান্ত নিচ্ছে।
সোর্স: এএফপি
বিডি প্রতিদিন/আশিক