বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, আওয়ামী লীগ রাজনীতি করতে পারবে না। সেই আওয়াজ আমরা ওঠাচ্ছি। আমরা আওয়ামী লীগের এ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে বিচার দাবি করছি।
গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবে আঞ্চলিক সম্পাদক পরিষদ আয়োজিত ‘জাতীয় ঐক্য ও বর্তমান বাস্তবতা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। সংগঠনের সভাপতি খালেদ সাইফুল্লাহ সোহেল খানের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম সম্পাদক সেলিম পারভেজের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ফজলুর রহমান, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক এরফানুল হক নাহিদসহ আঞ্চলিক সম্পাদক পরিষদের নেতারা বক্তব্য রাখেন। সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আওয়ামী লীগকে একদিকে চাইবেন তারা রাজনীতিতে নিষিদ্ধ হোক, আবার আপনারা তাদের বিচার করবেন না, পুলিশ দিয়ে তাদের কর্মসূচি বাধা দেবেন, এ স্ববিরোধিতা ঠিক নয়। আমরা স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, বৈপ্লবিক গণ অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে এই দেশের মানুষ আওয়ামী লীগকে প্রত্যাহার করেছে। আওয়ামী ফ্যাসিবাদের রাজনীতিকে প্রত্যাখ্যান করেছে, তাদের বিতাড়ন করেছে।
আওয়ামী লীগের বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের অবস্থানের সমালোচনা করে তিনি বলেন, আপনারা আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনের জন্য মাঠে নামতে দেবেন না। আমরা এটা সমর্থন করি, কিন্তু এভাবে কতদিন রাজপথে পুলিশ দিয়ে ঠেকাবেন? আপনারা বলবেন নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে চাই না, আওয়ামী লীগ রাজনীতি করতে পারবে না কিন্তু কী পদক্ষেপ নিচ্ছেন? আইনি কোনো পদক্ষেপ কি এই সরকার নিচ্ছে, প্রশ্ন রাখেন এই বিএনপি নেতা। আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়ে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা বলেছিলাম, সংবিধানের ৪৭ অনুচ্ছেদ অনুসারে রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে গণহত্যা এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য বিচারের ব্যবস্থা করা হোক। সে অনুযায়ী আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের আইন সংশোধনের দাবি জানিয়েছিলাম।
বিএনপির এ নেতা বলেন, কেউ কেউ বলতে শোনা যাচ্ছে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে যাদের বিচার হচ্ছে সেই বিচারে হয়তো পর্যবেক্ষণ আসবে আওয়ামী লীগের রাজনীতি বিষয়ে, সেটা অত্যন্ত দুর্বল পর্যবেক্ষণ হবে। তখনো আপনাদের প্রশাসনিক আদেশ দিতে হবে, আইন প্রণয়ন করতে হবে সেই পর্যবেক্ষণের নিরিখে। এখন যদি আপনারা সোচ্চার হন বিচারের জন্য, মানুষ চায় ফ্যাসিবাদী রাজনীতির একদম নির্মূল হয়ে যাক। সেই ব্যবস্থা আপনারা নিতে পারেন। বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য আরও বলেন, নির্বাচনমুখী সংস্কারের জন্য যেসব সংস্কার স্বল্প মেয়াদে করা দরকার সেগুলো চিহ্নিত করুন, সব মহলের সঙ্গে আলোচনা করুন, সেগুলোর আইনি সংস্কার করুন। আইনি সংস্কারের পর যদি প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের প্রয়োজন হয় সেটা করবেন, সেজন্য কত সময় লাগবে সেটা আমরা জানি।
