শারজাহ’র আল নাহদা এলাকার একটি উঁচু আবাসিক ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে অন্তত পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। রবিবার সকালে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
সংযুক্ত আরব আমিরাতভিত্তিক সংবাদমাধ্যম খালিজ টাইমস এ খবর জানিয়েছে।
খবরে বলা হয়, মৃতদের মধ্যে চারজন আগুন থেকে বাঁচতে গিয়ে ভবন থেকে পড়ে মারা যান। তাদের পরিচয় এখনও জানা যায়নি। এছাড়াও, একজন পাকিস্তানি ব্যক্তি (চল্লিশের কোঠায়) হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান, ধারণা করা হচ্ছে, ঘটনাটির ধাক্কায় তিনি মারা যান।
৪৪ তলা ওই ভবনের উপরের তলায় আগুনের সূত্রপাত হয়। এতে ছয়জন গুরুতর আহত হয়েছেন এবং একজন ধোঁয়ায় শ্বাসকষ্টে ভুগছেন। আহতদের আল কাসিমি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে এবং তারা স্থিতিশীল রয়েছেন বলে জানা গেছে।
দ্রুত উদ্ধার কাজ শুরু করলেও চারজন ভবন থেকে লাফিয়ে পড়ে প্রাণ হারান। তাদের দেহ সম্পূর্ণভাবে দগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। পাকিস্তানি নাগরিকের শরীরে কোনো পোড়া চিহ্ন ছিল না, তিনি আতঙ্কের কারণে হার্ট অ্যাটাকে মারা যান।
শারজাহ সিভিল ডিফেন্স জানিয়েছে, সকাল ১১টা ৩০ মিনিটে আগুনের খবর পাওয়া যায়। একাধিক ফায়ার স্টেশন থেকে ইউনিট এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে ও বাসিন্দাদের নিরাপদে সরিয়ে ফেলে। সন্ধ্যা ৭টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর ঠাণ্ডা করার কাজ শেষ করে ঘটনাস্থল পুলিশকে হস্তান্তর করা হয়। আগুনের সঠিক কারণ এখনও জানা যায়নি; তদন্ত শুরু হয়েছে।
ভবন থেকে ঘন ধোঁয়ার কুণ্ডলী উঠতে দেখা যায়, এবং আশপাশের এলাকা জনসাধারণের নিরাপত্তার জন্য ঘিরে ফেলা হয়।
খালিজ টাইমস জানায়, রবিবার তাদের প্রতিনিধি ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখতে পান বাসিন্দারা বাইরে অপেক্ষা করছেন, কেউ কেউ কাছের ক্যাফে ও রেস্তোরাঁয় অবস্থান করছিলেন। পরে সন্ধ্যার দিকে ধাপে ধাপে বাসিন্দাদের নিজ নিজ ঘরে ফেরার অনুমতি দেওয়া হয়। তবে ভবনের ৩০ তলার উপরের অংশ এখনো অনিরাপদ ঘোষণা করা হয়েছে, এবং সেখানে প্রবেশ নিষিদ্ধ।
যেসব পরিবার ঘরে ফিরতে পারছে না, তাদের জন্য অস্থায়ী আবাসনের ব্যবস্থা করা হবে বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। তদন্ত শেষে আগুনের উৎস এবং ক্ষয়ক্ষতির প্রকৃত অবস্থা জানা যাবে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আগুন ভবনের উপরের দুই তলায় লেগেছিল। সাহারা সেন্টারের বিপরীতে অবস্থিত এই ভবনটি শারজাহর অন্যতম উঁচু ভবন।
একজন ক্যাফে অপারেটর বলেন, “আমরা দেখেছি কত দ্রুত কর্মকর্তারা পৌঁছে গিয়ে বাসিন্দাদের সরিয়ে নিচ্ছিলেন। অনেকেই বাইরে অপেক্ষা করছিলেন, যারা আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হননি, তারা যেন দ্রুত ঘরে ফিরতে পারেন।”
এক দোকানদার জানান, ওই ভবনে অনেক পরিবার বাস করে। আশপাশের সড়কে এখনো ট্রাফিক ডাইভারশন চলছে যাতে উদ্ধার কাজ নির্বিঘ্নে চালানো যায়। সূত্র: খালিজ টাইমস
বিডি প্রতিদিন/নাজিম