ক্যারিবীয় সাগরে সন্দেহভাজন মাদকপাচারকারী নৌযানগুলোর বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ‘অতিরিক্ত সামরিক শক্তি’ প্রয়োগের নিন্দা জানিয়েছে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স তাদের এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।
খবরে বলা হয়, শনিবার মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে দেওয়া এক বিবৃতিতে এ নিন্দা জানানো হয়।
বিবৃতিতে মন্ত্রণালয়টির মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বলেছেন, “মাদকবিরোধী অভিযানে (যুক্তরাষ্ট্রের) অতিরিক্ত সামরিক শক্তি ব্যবহারের তীব্র নিন্দা জানাই আমরা। এসব পদক্ষেপ একইসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক আইনের ধারাগুলোর লঙ্ঘন।”
ওয়াশিংটন বলছে, তারা অবৈধ মাদক কারবারের বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছে। সেপ্টেম্বরের প্রথমদিক থেকে ক্যারিবীয় সাগরে ও সম্প্রতি প্রশান্ত মহাসাগরের পূর্বাঞ্চলে সন্দেহভাজন মাদকাবাহী নৌযানগুলোতে হামলা চালাচ্ছে মার্কিন বাহিনী। তাদের হামলায় এ পর্যন্ত অন্তত ১৪টি নৌযান ধ্বংস এবং ৬৪ জন নিহত হয়েছেন।
রবিবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ জানিয়েছেন, ক্যারিবীয় অঞ্চলে সন্দেহভাজন ‘মাদক পাচারকারী গোষ্ঠী পরিচালিত’ একটি নৌযানে মার্কিন সামরিক বাহিনীর সর্বশেষ হামলায় অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন।
এসব অভিযান পরিচালনার কথা বলে যুক্তরাষ্ট্র ক্যারিবীয় অঞ্চলে এফ-৩৫ স্টিলথ যুদ্ধবিমান, যুদ্ধজাহাজ ও কয়েক হাজার সেনা মোতায়েন বড় ধরনের সামরিক উপস্থিতি গড়ে তুলেছে। বিশ্বের বৃহত্তম যুদ্ধজাহাজ মার্কিন বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস জেরাল্ড আর ফোর্ড দক্ষিণ ক্যারিবীয় সাগরের পথে আছে। এই বিমানবাহী রণতরীটিকে ভেনেজুয়েলার উপকূলের অদূরে মোতায়েন করা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
মার্কিন বাহিনীর ধ্বংস করা নৌযানগুলো আদৌ কোনো মাদক পরিবহন করছিল কিনা, সে সম্বন্ধে এখন পর্যন্ত কোনো প্রমাণও দিতে পারেনি ওয়াশিংটন। ক্যারিবীয় উপকূলের দেশ ভেনেজুয়েলার অভিযোগ, কারাকাসের বামপন্থি সরকারকে ক্ষমতা থেকে হটানোর লক্ষ্যে এই এলাকায় শক্তিশালী সামরিক সমাবেশ গড়ে তুলছে যুক্তরাষ্ট্র আর উদ্দেশ্যকে আড়াল করতে মাদকবিরোধী অভিযানকে ব্যবহার করছে।
এই অভিযানকে ঘিরে ভেনেজুয়েলা ও প্রতিবেশী কলম্বিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের উত্তেজনা তীব্র হয়ে উঠছে।
জাখারোভা তার মন্তব্যে বলেছেন, “ভেনেজুয়েলার সার্বভৌমত্ব রক্ষায় দেশটির নেতৃবৃন্দের প্রতি রাশিয়া তার দৃঢ় সমর্থন নিশ্চিত করছে।”
চলতি বছরের মে’তে মস্কোয় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো একটি কৌশলগত অংশীদারিত্ব চুক্তি করেছেন। মাদুরো বারবার অভিযোগ করে বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র তাকে ক্ষমতা থেকে সরাতে চায়।
বিডি প্রতিদিন/নাজিম