পূর্ব আফ্রিকার দেশ তানজানিয়ায় জাতীয় নির্বাচন ঘিরে ব্যাপক সহিংসতার পর ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট সামিয়া সুলুহু হাসানকে বিজয়ী ঘোষণা করেছে দেশটির নির্বাচন কমিশন।
বুধবার অনুষ্ঠিত নির্বাচনে সামিয়া প্রায় ৩ কোটি ২০ লাখ ভোটের মধ্যে ৯৮ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন বলে কমিশনের দাবি। তবে নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহল থেকে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে।
নির্বাচনের দিন ও পরবর্তী সময়ে দেশজুড়ে সংঘর্ষ ও বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। বিরোধী দলের অভিযোগ, নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে প্রায় ৭০০ জন নিহত হয়েছেন। কিন্তু সরকার এই সংখ্যাকে ‘অতিরঞ্জিত’ বলে উড়িয়ে দিয়েছে।
তানজানিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ কম্বো থাবিত বলেন, “এটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা মাত্র। নিরাপত্তা বাহিনী দ্রুত ও দৃঢ়ভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে।”
নির্বাচনে সামিয়ার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন তুনদু লিসু ও লুহাগা এমপিনা, তবে বিভিন্ন আইনি জটিলতার কারণে তারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে বাদ পড়েন। প্রধান বিরোধী দল চাদেমাকেও ভোটে অংশগ্রহণে বাধা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ ওঠে। ভোটগ্রহণের দিন থেকেই রাজধানী দার এস সালামসহ বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভকারীরা পোস্টার ছিঁড়ে ফেলে এবং পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায়।
অস্থিরতা দমনে সরকার কারফিউ জারি ও ইন্টারনেট বন্ধ করে দেয়।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস সব পক্ষকে সংযম বজায় রাখার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “নিরাপত্তা বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে, সংলাপ ও শান্তিপূর্ণ সমাধানই এখন জরুরি।”
জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তর জানিয়েছে, দেশের অন্তত তিনটি শহরে সহিংসতায় কমপক্ষে ১০ জন নিহত হওয়ার নিশ্চিত তথ্য তাদের হাতে আছে।
এদিকে যুক্তরাজ্য, কানাডা ও নরওয়ে—এই তিন দেশ এক যৌথ বিবৃতিতে নির্বাচনের সহিংসতা নিয়ে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে এবং নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি তুলেছে।
বিজয়ের পর প্রশাসনিক রাজধানী দোদোমা থেকে জাতির উদ্দেশে ভাষণে প্রেসিডেন্ট সামিয়া বলেন, “বিক্ষোভকারীদের আচরণ দায়িত্বজ্ঞানহীন। দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
বর্তমানে দার এস সালাম ও অন্যান্য শহরে নিরাপত্তা টহল জোরদার, পরিস্থিতি এখনো থমথমে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় নিরপেক্ষ তদন্ত ও রাজনৈতিক সংলাপের আহ্বান জানাচ্ছে।
(রয়টার্স)
বিডি প্রতিদিন/আশিক