ভালোবাসা কোনো দেশ, ধর্ম বা দূরত্ব মানে না—এই হৃদয়স্পর্শী উদাহরণ দেখা গেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলায়। প্রেমের টানে চীন থেকে বাংলাদেশে এসেছেন চীনা যুবক ওয়াং তাও, যিনি নাসিরনগরের কুন্ডা ইউনিয়নের কোনাপাড়া গ্রামের তরুণী সুরমা আক্তারের সঙ্গে জীবনের বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার জন্য এখানে পৌঁছেছেন।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, প্রায় দেড় মাস আগে ‘ওয়াল টক’ নামের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরিচয় হয় সুরমা আক্তার এবং চীনের হুয়ানান প্রদেশের যুবক ওয়াং তাওর। নিয়মিত কথোপকথনের মাধ্যমে ধীরে ধীরে তাদের মধ্যে গভীর সম্পর্ক গড়ে ওঠে, যা পরিণত হয় প্রেমে। দুই পরিবারও তাদের সম্পর্ক মেনে নেয়।
গত শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) রাতের দিকে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন ওয়াং তাও। বিমানবন্দর থেকে তাকে নাসিরনগরের কোনাপাড়া গ্রামের সুরমার পরিবারের সদস্যরা নিয়ে আসেন। খবরটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে গ্রামের শত শত মানুষ এক নজর দেখতে ছুটে আসে ‘চীনা জামাই’কে।
সুরমা আক্তারের মা নুরেনা বেগম বলেন, মেয়ের ভালোবাসার টানে চীনের ছেলেটি এসেছে। সে বর্তমানে কোনো ধর্ম মানে না, তবে আমাদের মেয়েকে বিয়ে করতে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করবেন এবং মুসলিম রীতিনীতিতে বিয়ে সম্পন্ন হবে।
নাসিরনগর থানার কুন্ডা বিট অফিসার এসআই মো. জাহান-ই-আলম বলেন, চীনা যুবক নাসিরনগরে আসার খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়েছি। পাসপোর্ট ও কাগজপত্র দেখে নিশ্চিত হয়েছি তিনি চীনের নাগরিক। ওয়াং তাও চীনের হুয়ানান প্রদেশের ওয়াং ইচাং চাওর ছেলে।
সুরমা আক্তার বর্তমানে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছেন। দুই দেশের ভিন্ন ভাষা, সংস্কৃতি ও ধর্মীয় পার্থক্য সত্তেও যুগলটি প্রমাণ করেছেন যে, সত্যিকারের ভালোবাসা কোনো বাধা মানে না।
গ্রামজুড়ে এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে ‘চীনা জামাই’। কেউ বলছেন, এটি যেন সিনেমার মতো ঘটনা, আবার কেউ হাসিমুখে মন্তব্য করছেন, ‘প্রেম মানে শুধু অনুভূতি নয়, এটি এখন আন্তর্জাতিক সম্পর্কের সেতুবন্ধন।’
বিডি-প্রতিদিন/মাইনুল