দিনাজপুর শহরের পুলহাট, সিকদারহাট হয়ে খানপুর পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার সড়কের দুই পাশের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ শুরু করেছে দিনাজপুর সড়ক বিভাগ। সোমবারও এই উচ্ছেদ অভিযান চলবে।
রবিবার সকাল থেকে শহরের পুলহাটের পুলিশ ফাঁড়ির মোড় থেকে এই উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়। অভিযানের নেতৃত্ব দিচ্ছেন সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রধান কার্যালয়ের উপ-সচিব এস্টেট ও আইন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আশফাকুল হক চেীধুরী।
দিনাজপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, গত ৮৩ বছর আগে ১৯৪২ সালে জমি অধিগ্রহণ করে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। এই অধিগ্রহণকৃত জমি উদ্ধারে এর আগেও ২০০২ সালে সড়ক বিভাগ গেজেটের আওতায় সবাইকে উচ্ছেদের নোটিশ দিয়েছিল। কিন্তু মোকদ্দমাসহ জটিলতার কারণে সে সময় উচ্ছেদ অভিযান হয়নি। এবার পুনরায় নোটিশ, মাইকিং ও পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ৩০ অক্টোবরের মধ্যে অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেয় সড়ক বিভাগ। এতে অনেকে নিজ উদ্যোগে অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নিয়েছেন। রোববার সকাল থেকে দিনাজপুর থেকে খানপুর পর্যন্ত (জেড-৫৮০২) মহাসড়কের ওপর অবৈধ স্থাপনা অর্থাৎ পুলহাট থেকে খানপুর পর্যন্ত সড়ক বিভাগের রাস্তার দুই ধারে ১২০ ফিট পর্যন্ত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ শুরু হয়।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানায়, উচ্ছেদ কার্যক্রমে ছোট-বড় দুই হাজার মানুষের দোকান-পাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙা পড়বে এবং ৫ হাজার পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
দিনাজপুর সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ওই জমিগুলো ১৯৪২ সালে গেজেটভুক্ত হয়েছে। যেহেতু গেজেট হয়েছে সেহেতু এসব জমি মালিকানা দাবির কোনো সুযোগ নেই। সোমবার পর্যন্ত উচ্ছেদ অভিযান চলবে। এটি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে করা হচ্ছে। এস্কেভেটর-ভেকুসহ কয়েকশ শ্রমিক এই উচ্ছেদ অভিযানে অংশ নিয়েছেন। সঙ্গে রয়েছে পুলিশ, আনসার, র্যাব ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
এর আগে দিনাজপুর সড়ক বিভাগ কর্তৃক সার্ভে করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, শিল্প ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং বাড়ি উচ্ছেদের জন্য লাল দাগ দিয়ে চিহ্নিত করা হয়।
তবে ব্যবসায়ী মোসাদ্দেক হোসেনসহ ক্ষতিগ্রস্তরা অভিযোগ করেছেন, সড়ক বিভাগ কোনো জরিপের আওতায় কোন দাগে কী পরিমাণ জমি উচ্ছেদ করবেন তার কোনো পরিসংখ্যান আমাদের জানাননি। ১৯৪২ সালে গেজেট হওয়ায় গত ৮৩ বছরের মধ্যে অধিগ্রহণকৃত জমি সড়ক বিভাগের রেকর্ডভুক্ত ও নথিভুক্ত করার কোনো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়নি। ফলে ৮৩ বছর ধরে ওইসব জমি ক্রয়-বিক্রয় হয়েছে। সরকারের রেজিস্ট্রার কর্তৃক দলিলাদি সম্পন্ন ও নাম খারিজসহ খাজনাদি পরিশোধ হয়েছে এবং চলমান রয়েছে। এই খাতে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আদায় করেছে। গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে আইনানুগ বৈধতা না থাকা সত্তেও উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করছে।
বিডি প্রতিদিন/এএম