আগে ঈদ ঘিরে বাড়ি ফেরা মানুষের ভোগান্তি ছিল চরমে। গণপরিবহন, ট্রেনে মিলতো না আসন। রেলওয়ে স্টেশন, বাস স্টেশনগুলোতে ছিল ভিড়। তবে এবারের ঈদে বাড়ি ফেরায় দেখা মিলছে ভিন্ন চিত্র। রেলওয়ে স্টেশন, বাস স্টেশনগুলোতে নেই মানুষের ভিড়। নেই টিকিট নেওয়ার জন্য দীর্ঘ সারিও। এরপরও মানুষ স্বস্তি নিয়ে ফিরছে বাড়ি। বাস-ট্রেন কোথায়ও যেন দেখা মিলছে না দুর্দশার অতীতের চিত্র। ফলে এবারের ঈদে মানুষ বাড়ি ফিরছে স্বস্তির সাথে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রশাসনের কঠোরতা আর লম্বা ছুটির কারণে এবারের ঈদ যাত্রায় স্বস্তি মিলছে। তবে বৃহস্পতিবার থেকে কিছুটা চাপ বাড়তে পারে বলে ধারণা তাদের।
বিআরটিএ চট্টগ্রাম বিভাগের পরিচালক (ইঞ্জি.) মাসুদ আলম বলেন, ঈদকে ঘিরে বাস কাউন্টারগুলো যেন অতিরিক্ত ভাড়া নিতে না পারে সে জন্য আমরা নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছি। পাশাপাশি সড়কেও যেন কোন ধরনের সমস্যা না হয় সে বিষয়ে চালকদের পরামর্শ, সর্তক করা হচ্ছে। ঈদ যাত্রায় শৃঙ্খলার সাথে গাড়ি চালানোর পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। যাত্রীদের যেন কোন ধরনের হয়রানি বা বাড়তি ভাড়া গুণতে না হয় তা নিশ্চিতে বিআরটিএ মাঠে কাজ করছে।
চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার আবু জাফর মজুমদার বলেন, ১৬টা আন্তঃনগর এবং ঈদের স্পেশাল ট্রেন যাবে। মানুষের ঈদ যাত্রা এবার স্বস্তির করার জন্য আমাদের অবস্থান থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। আমাদের বেশিরভাগই ট্রেন নির্দিষ্ট সময়ে চলাচল করছে। তবে আমাদের লোকোমোটিভের সংকট রয়েছে, সেক্ষেত্রে কোনো ট্রেন পথে কোনো সমস্যা হলে সে ট্রেন হয় তো বিলম্ব হয়। এটা মূলত চাহিদার সাথে জোগানে ব্যাপক থাকার কারণে এ সমস্যা হচ্ছে। সব মিলিয়ে আমাদের সকল ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে, মানুষ যেন স্বস্তির সাথে বাড়ি ফিরতে পারে।
চট্টগ্রাম রেলওয়ে পুলিশের ওসি এস এম শহিদুল ইসলাম বলেন, ঈদকে ঘিরে রেলওয়ে পুলিশ তিন স্তরের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে। রেলওয়ে পুলিশের পাশাপাশি এপিবিএনসহ অনান্য প্রশাসন কাজ করছে। যাত্রীরা যেন কোনো ধরনের হয়রানি না হয় সে জন্যও কাজ করা হচ্ছে। ট্রেনের ভিতরেও যেন যাত্রীরা নিরাপদে বাড়ি ফিরতে পারে আমাদের টিম সেখানেও রয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের সমস্যার অভিযোগ আমাদের কাছে আসেনি।
চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্ল্যাটফর্মে ভিড় ছিল অনেকটাই নিয়ন্ত্রিত। যাত্রীরা ফাঁকা স্টেশনে নির্দিষ্ট বগিতে গিয়ে বসছেন। বিগত সময়গুলোতে ঈদের আগে আগে চট্টগ্রাম থেকে বাড়ি ফেরা যাত্রীদের ভিড়ে রেলওয়ে স্টেশনে দ্ড়াানোর সুযোগ ছিল না। তবে বর্তমানে স্টেশনে ভিড় দেখা যায় না। ফলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি যাত্রীরাও স্বস্তি নিয়ে যাত্রা করছেন। এছাড়াও প্রবেশ মুখে যাত্রীদের নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখছেন দায়িত্বরত আরএনবি সদস্য ও রেলওয়ের স্টাফরা। পাশাপাশি ছাদে ভ্রমণ ঠেকাতে কঠোর অবস্থানে দেখা গেছে সংশ্লিষ্টদের।
এদিকে চট্টগ্রামের বাস কাউন্টারগুলো ঘুরে দেখা গেছে, ঈদে ঘরমুখো মানুষের তেমন চাপ নেই। নিয়মিত যাত্রার তুলনায় কিছুটা বাড়লে আজ থেকে যাত্রীদের চাপ বাড়ার সম্ভাবনা দেখছেন চালক-হেলপারা। তারা বলছেন, প্রতি ঈদে এ ভাবে আমাদের দিন কাটে। ঈদের দু’একদিন আগে যাত্রীদের চাপ থাকে। তবে ঈদে এখনো যাত্রীদের চাপ না থাকলেও সজাগ রয়েছে জেলা প্রশাসন ও বিআরটিএ। জননিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, সড়ক পরিবহন ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা এবং নির্ধারিত বাসভাড়ার অতিরিক্ত আদায় রোধে নিয়মত অভিযান চালানো হচ্ছে।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল